
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা :: জেনে নিন শুঁটকি মাছ খাওয়া উপকারী না ক্ষ*তিকর
আজকাল অনেকেই রকমারি তরকারি পদের মধ্যে শুঁটকি মাছ রাখেন। কেউ কেউ পছন্দের জন্য শুঁটকি মাছকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। শীত কিংবা গ্রীষ্মসহ বছরের বারো মাসই বিভিন্ন সবজি দিয়ে শুঁটকি মাছ খেয়ে থাকেন।
শুঁটকি মাছ বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। যেমন, ভর্তা বা ভুনা. মৌসুমী সবজির সঙ্গে ভাজি বা ঝোল, আবার কেউ শুধু শুঁটকি ফ্রাই করে খেয়ে থাকেন। সাধারণত তাজা মাছের উপকারিতার কথা সবারই কম-বেশি জানা। কিন্তু শুঁটকি মাছে কোনো ধরনের উপকারিতা আছে কিনা কিংবা এই মাছ খাওয়া ক্ষতিকার কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন অনেকের। শুঁটকি মাছের গুরুত্ব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিস। এবার তাহলে শুঁটকি মাছ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
শুঁটকি মাছের গুরুত্ব: দীর্ঘ পুরনো কাল থেকে শুঁটকি তৈরির প্রচলন ও এ মাছের বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে বাংলায়। পুষ্টিগুণ হিসেবেও যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে শুঁটকি মাছের। প্রতি ১০০ গ্রাম শুঁটকি মাছ থেকে প্রায় ৬২ গ্রাম প্রোটিন, ১৩ গ্রাম উপকারী ফ্যাট ও প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ডি পাওয়া যায়। আবার তাজা মাছের তুলনায় শুঁটকি মাছে ক্ষণিজ লবণের পরিমাণও অনেক বেশি পাওয়া যায়।
শুঁটকি তৈরির প্রচলিত অস্বাস্থ্যকর দিকগুলো: প্রচলিত পদ্ধতিতে মাছ আহরণের পর সরাসরি তা রোদে দেয়া হয় শুকানোর জন্য। এ কারণে মাছে নোংরা, ময়লা, ধুলা, কাদাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থাকে। আবার উন্মুক্ত পরিবেশে মাছ শুকানোর কারণে এতে কুকর, বিড়াল, মাছিসহ অন্যান্য কীটপতঙ্গের সংক্রমণ দেখা যায়। অনেক সময় কীটনাশকও প্রয়োগ করা হয় শুঁটকিতে। এ কারণে ওই মাছ আর খাওয়ার উপযোগী থাকে না। বাসি বা পচা মাছ থেকে শুঁটকি করা হলে তা মানসম্পন্ন হয় না।
স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ শুঁটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া: স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ শুঁটকি উৎপাদনে মাছ আহরণ থেকে শুরু করে তা বাজারজাতের জন্য মোড়কজাত পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনার দিকে নজর রাখতে হবে। প্রতিটি ধাপে সতর্কতার সঙ্গে দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
এছাড়া এর আগে এক প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম ল্যাবএইড ও পার্ক ভিউ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেডের কনসালট্যান্ট পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি জানান, শুঁটকি মাছ পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এটি খাওয়ার পর শরীরে পানির সমতা বজায় রাখে। হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে সহায়তা করে। ফসফরাসের পরিমাণ ভালো থাকায় এটি খাওয়ার পর হাড়, দাঁত ও ডিএনএ এবং আরএনও গঠনেও ভালো ভূমিকা রাখে। তবে এ মাছের যেমন উপকারিতা রয়েছে, তেমনই আবার কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। কিডনিজনিত সমস্যা, রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকলে শুঁটকি মাছ খাওয়া ঠিক নয়। এছাড়া শুঁটকি খাওয়ার পর যাদের সমস্যা হয়, তাদের চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া উচিত।