নিউজ ডেস্ক :: বিএনপির মৃত নেতা বিস্ফোরক মামলার আসামি।
বিএনপি নেতা নাসির রহমান এক বছর আগে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ছিলেন ঢাকা উত্তরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশের সময় রামপুরা থানাধীন ডিআইটি রোডের ওপর ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের ২৪১ জনের নাম উল্লেখ করে রামপুরা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। এ মামলায় মৃত নাসিরকে ৮৮ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। যদিও মামলার পর সংশোধনের আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মৃত নাসির রহমানের স্ত্রী রিনা রহমান বলেন, এক বছর আগে তিনি মারা গেছেন। তিনি কীভাবে এখন রাজনীতি করবেন? তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। মানুষকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে পুলিশ মৃত মানুষের নামে মামলা দিয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার দুদিন পর মৃত নাসিরের নাম এজহারে আসায় তা সংশোধনের
আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামপুরা থানার উপপরিদর্শক চম্পক চত্রবর্তী। এতে বলা হয়, বাদী সোর্সের মাধ্যমে তার নাম এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রাথমিক তদন্তে আসামি আগেই মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিএনপির মহাসমাবেশের দিন বিকেলে দলটির এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ নেতাকর্মী মৌচাক মার্কেটের দিক থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে ঘটাতে মালিবাগ রেলগেট পার হয়ে রামপুরা থানাধীন ডিআইটি রোডের ওপর ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। প্রতিরোধ করতে গেলে আসামিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং আট থেকে দশটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুলিশকে হত্যার চেষ্টা করে। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক মো. আব্দুল জলিল বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চম্পক চত্রবর্তী বলেন, ভুলবশত এজহারে নাসিরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তা সংশোধনের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন মৃত মানুষকে আসামি করা হয়েছে, যা কোনোভাবে কাম্য নয়। এ মামলা থেকে স্পষ্ট হয়েছে পুলিশ সাজানো নাটকের মাধ্যমে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে।
ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল্লাহ আবু কালবেলাকে বলেন, কোনোভাবেই মৃত ব্যক্তির নাম এজাহারে আসা ঠিক না। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও সতর্ক হতে হবে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী উপপরিদর্শক মো. আব্দুল জলিলের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।