
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পহেলা মে থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১ মে শুরু হচ্ছে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ ২০২৫। এ বছর ৯ম বারের মতো বাংলাদেশে এ সপ্তাহটি উদযাপন হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম জেলা উপজেলায় নানা আয়োজনে সপ্তাহটি উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
সপ্তাহটি উপলক্ষে আগামী ৭ মে সকাল ১০টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সপ্তাহটি উদযাপনের জন্য সংগঠনটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর সকলের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
গণমাধ্যম সপ্তাহ উপলক্ষে বিএমএসএফ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দেশে শিক্ষা সপ্তাহ, স্বাস্থ্য সপ্তাহ, কৃষি সপ্তাহ, মৎস্য সপ্তাহ, পুলিশ সপ্তাহ, পুষ্টি সপ্তাহ, আনসার সপ্তাহ, বিজিবি সপ্তাহ, চিকিৎসা সপ্তাহ, নৌ সপ্তাহ এবং হাতদোয়া, পাও দোয়া অগণিত দিবস রয়েছে। সে সকল সপ্তাহ এবং দিবস আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় ভাবে উদযাপন করা হয়ে থাকে। কিন্তু সাংবাদিকদের একটি মাত্র দিবস ৩রা মে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে রাষ্ট্রীয় ভাবে উদযাপিত হলেও বাংলাদেশে হয়না,এটি গণমাধ্যমের জন্য অমর্যাদার ও দুঃখজনক ।
সাংবাদিকদের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ এ সপ্তাহটি ঢাকাসহ সারাদেশের সকল জেলা -উপজেলার সাংবাদিক সংগঠনকে উদযাপনের জন্য বিনীত আহবান জানিয়েছেন আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সকল দ্বিধা দ্বন্দ্ব, দলমত, রীতি-রেওয়াজ ভেঙ্গে পেশার স্বার্থে গণমাধ্যম সপ্তাহটি পালন করা উচিত।
প্রসঙ্গত: বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ২০১৭ সাল থেকে ৩রা মে বিশ্ব গণমাধ্যম দিবসকে মাঝে রেখে ১-৭ মে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ নামে একটি সপ্তাহের প্রবর্তণ করে ৮ বছর ধরে সাংবাদিকরা উদযাপন করে আসছে। এবছর ৯ম বারের মত উদযাপিত হচ্ছে।
এদেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা সবসময়ই রাষ্ট্রের দ্বারা অবহেলিত, নিষ্পেষিত এবং সুষম সুবিধা বঞ্চিত হয়ে আসছে। রাষ্ট্রের এমন কোনো পেশাজীবি নেই যে তারা রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা, বেতন ভাতা গ্রহন করেন না; ব্যতিক্রম শুধু সাংবাদিকরা। এঁরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করলে-ও তারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরের লোকজন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন প্রায়শই।
দেশ গঠনের ৫৪ বছর সময়ে দাড়িয়ে সাংবাদিক সমাজকে নিজেদের দাবি এবং অধিকার নিশ্চিত করতে মাঠে আন্দোলন করতে হয়; যা বেমানান। সাংবাদিকতা এমনই একটি পেশা যারা নিজেদের রুটিরূজি-বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে, সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করতে, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন কিংবা সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য আজও মাঠে কাঁদছে তারা অথচ কোনও সুরাহা নেই।
গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা কীভাবে, কেমন করে পরিচালিত হবে তা রাষ্ট্রযন্ত্র এবং স্টেক হোল্ডার গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে আরও আগে নিশ্চিত করা উচিত ছিলো। রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়সারা কায়কারবারের কারণে পেশাটি এখনো অরক্ষিত এবং উপেক্ষিত। মূল কথা; রাষ্ট্র যন্ত্রের সাথে জড়িত অধিকাংশরাই চায়না সাংবাদিকরা নিরাপদে থাকুক, ভালো থাকুক।
জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ -২০২৫ ইতিমধ্যে সাংবাদিকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিনত হয়েছে। সপ্তাহটিকে ঘিরে এবছর আগের তুলনায় আরও বেশি কর্মসূচীর মাধ্যমে ঝাঁকজমক এবং গুরুত্ববহ করে তুলতে চায়। সেক্ষেত্রে এবার বিএমএসএফ তার নিজস্ব গন্ডি পেরিয়ে দেশের সকল প্রেস ক্লাবসহ যে কোনো সাংবাদিক সংগঠনের সমন্বয় ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সপ্তাহটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে বিএমএসএফের শাখা কমিটি সহযোগী সংগঠন সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশ এবং সাংবাদিক সদস্যদের অংশগ্রহণে প্রতিবছর জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পাঠানো হয়ে থাকে। এবছরও ১৫ এপ্রিল তা পাঠানো হয়েছে।
সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে জেলা-উপজেলায় ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে ১৪ দফার লিফলেট বিতরণসহ পহেলা মে শোভাযাত্রা, ২ মে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগীতা, ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, ৪ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের সমস্যা চিহ্নিত করতে মিটি দ্যা প্রেস, ৫ মে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আন্ত: যোগাযোগ বৃদ্ধি, সোর্সদের সাথে পারস্পরিক সমন্বয়, ৬ মে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা এবং ৭ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)।