
নিউজ ডেস্ক :: যার মানবিক ব্যবহারের মধ্যে সত্যিকারের ভালোবাসা ও সততায় মুগ্ধ হতে হয়। তিনি উদার মানবদরদি সামাজিক মানুষ । তার মনের দরজাটা যেমন উদার, খোলামেলা, তেমনি অন্দর-সদর দরজাও উন্মুক্ত সবার আনাগোনায়। তিনি যেন পূর্ণিমার পূর্ণ জোছনার আলোর মতো চিকিৎসা সেবায় আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
একজন চিকিৎসক মানুষকে সেবা করার যত বেশি সুযোগ পান, অন্য পেশাজীবীরা তা পান না। তাই চিকিৎসককে আগে ভালো মানুষ হতে হয়, তাহলেই তিনি হতে পারেন আদর্শিক, মানবিক একজন চিকিৎসক। একজন চিকিৎসকের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে রোগীকে সম্মান করা। কোনোরূপ তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করা।
বন্ধুসুলভ আচরণ করা। একজন চিকিৎসককে স্বভাবতই নিঃস্বার্থ, অঙ্গীকারবদ্ধ, দেশপ্রেমিক, দায়িত্বশীল ও দয়ালু হতে হয়। রোগীকে মানবিক মন নিয়ে সেবা করে তার দুঃখ-বেদনা অনুভব করতে পারেন। এমনই একজন সদালাপী, মানবিক চিকিৎসক ডাঃ অমিতাভ তরফদার। তার আন্তরিকতা আর আলাপনেই রোগী অনেকটা নির্ভরতা খুঁজে পান। সুস্থ হয়ে ওঠার মনোবল ফিরে পান। তিনি রোগীকে আপন করে নিতে পারেন। শুধু রোগী নয়, মানুষকে আপন করে নেওয়ার এক অমোঘ শক্তি রয়েছে তার, যা সবাইকে মুগ্ধ করে।
তেমনি আজ কথা বলব, একজন এমবিবিএস চিকিৎসকের কথা। যিনি এই পেশায় থেকেও মানব সেবার ব্রত নিয়ে অভিজাত শহরাঞ্চল ছেড়ে এসেছিলেন গ্রামাঞ্চলে। তার লক্ষ্য ছিল একটাই-সাধারণ মানুষের মাঝে সেবা পৌঁছে দেওয়া। যা তিনি আজ অনেকাংশেই এর বাস্তব রূপও দিয়েছেন নিজ কর্মগুণে। সাধারণ মানুষের মাঝে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। হয়েছেন সবার সেরা, সেরাদের সেরা।
বেশ কয়েক বছর যাবৎ দুমকি উপজেলা সদরের বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল লুথ্যরান হেলথ্ কেয়ারের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পাশাপাশি মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেও অনেককেই সহযোগিতা করে থাকেন এই গুণী চিকিৎসক। ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সবার মধ্যে তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্বস্ত বন্ধু। তাই তো রাতারাতি সাধারণ মানুষের কাছে তিনি মানবিক ডাক্তার বলেও গোটা পটুয়াখালী জেলার মধ্যে আলাদা একটা পরিচিতি পেয়েছেন। উল্লেখ্য, তিনি ২০১৩ সালের জুলাই মাসে এমবিবিএস পাস করেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ইন্টার্নি শেষ করেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নাইটিঙ্গেল মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
২০১৫ সালে ওই হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে মর্নিং শিফটে যোগদান করেন। একই সাথে ইভিনিং এবং নাইট শিপটে কাজ করেন। ২০১৫ সালের আগস্টে সার্জারি বিভাগে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে শিশু বিভাগে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবেও কাজ করেন।
২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি দক্ষিণাঞ্চলের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য সেবাদানকারী লুথ্যারান হেলথ কেয়ারে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। এখানে যোগদানের পর থেকেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি তৃণমূল-প্রান্তিক মানুষের মাঝে এই প্রতিষ্ঠানের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। তিনি চিকিৎসা সেবায় নিত্যনতুন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।
এখানকার ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষের আস্থার প্রতীক এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল সেটি আবার একটি বিশ্বাসের জায়গায় রূপ দিয়েছেন তিনি। রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার, স্বাস্থ্য সেবায় গুণগত পরিবর্তন আনা এবং সেবা প্রার্থীদের আন্তরিকতা দেখানোর মধ্য দিয়ে একটি বিশ্বস্ততার জায়গায় এনে দিয়েছেন। তিনি ১৯৮৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর খুলনা সদরের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা সুনীল তরফদার ব্যবসায়ী ছিলেন এবং মা গিতা তরফদার অবসরপ্রাপ্ত নার্সিং সুপারভাইজার। লুথ্যারান হেলথ কেয়ারে চিকিৎসা নেয়া রোগী মো হাসিবুল হাসান বলেন, ভালো সনদ, বড় ডিগ্রি থাকলেই বড় চিকিৎসক কিংবা ভালো চিকিৎসক হওয়া যায় না। একজন ভালো চিকিৎসক হতে গেলে একজন মানুষের মধ্যে অনেকগুলো গুন বিদ্যমান থাকতে হয়। যা অমিতাভ দাদার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। সোনিয়া আক্তার নামের এক শিশুর মা বলেন, আমি আমার সন্তানকে নিয়মিত তার কাছে চিকিৎসা নেই।
তিনি খুব ভালো মানুষ এবং একজন মানবিক মানুষ। তার সঙ্গে কথা বললেও রোগীর অর্ধেক রোগ সেরে যায়। আমরা তার মঙ্গল কামনা করি। লুথ্যারান হেলথ কেয়ারের শিশু ও মেডিসিন বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞ ডা. অমিতাভ তরফদার বলেন, বরাবরের মতোই নিঃস্বার্থভাবে সাধারণ মানুষের আমৃত্যু সেবা করতে চাই। গরীবদেরকে সেবা ও সহযোগিতা করি, ভবিষ্যতেও করতে চাই।
এতে আমার ভালো লাগে। মানব সেবাই হচ্ছে আমার মূল লক্ষ্য। তাছাড়া সকল ধর্মও তাই উৎসাহিত করে। তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসকরা এখানে এলেও থাকতে চায়না। কিন্তু আমি এসব স্থানে থেকে সেবার ব্রত নিয়ে তাদের পাশে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে থাকার চেষ্টা করি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবা দেওয়ার মুহুর্তগুলোকে আমি বেশ ভালোই উপভোগ করি।
উল্লেখ্য, এই চিকিৎসক ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক গরীব ও দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া এবং ব্যক্তিগত খরচে তাদের ওষুধ দিয়ে থাকেন। তিনি ব্যক্তিজীবনে একজন সুখী মানুষ। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও সদালাপী একজন মানুষ তিনি। এর ফলেই তিনি গোটা দুমকি উপজেলাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে বেশ সুখ্যাতি পেয়েছেন