
নিজস্ব প্রতিবেদক ::: চালের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বরিশালে মানববন্ধন করেছে নাগরিক সমাজের একাংশ। ‘ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও’ স্লোগানে তারা চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ দফা দাবি জানায়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও নাগরিকেরা অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারি পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির পেছনে চালের একক ভূমিকা প্রায় ৪০ শতাংশ। অথচ বোরো মৌসুমে চালের উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যাপ্ত ছিল। তাঁরা বলেন, মিল পর্যায়ে খরচ বৃদ্ধি, ধানের দামের অস্থিরতা, অবৈধ মজুতদারি ও বাজার নজরদারির অভাবের কারণে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ফলে কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, আবার ভোক্তাকেও চড়া দামে চাল কিনতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার (এফএও) তথ্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, দেশে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ খাদ্য-নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রতি ১০ জনে তিনজন প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাবার জোগাড় করতে পারছেন না। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আয় না বাড়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, একজন মানুষের মাসিক ন্যূনতম খাদ্য ব্যয় ৩ হাজার ৫১ টাকা, যা খাদ্য দারিদ্র্যসীমার চেয়ে ৬৯.৫ শতাংশ বেশি।
চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমাবেশ থেকে যে ৫ দফা দাবি জানানো হয়, তা হলো—
১. কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সরকারের চাল কেনার পরিধি বাড়ানো।
২. দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু।
৩. বাজার ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন, মূল্যনির্ধারণ ও ভোগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকের স্বার্থরক্ষা।
৪. ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তায় ওএমএস ও টিসিবি কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং
৫. সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা বন্ধ করে বাজারে কঠোর নজরদারি।
সমাবেশে বক্তব্য দেন ক্যাবের বরিশাল শাখার সম্পাদক রনজিৎ দত্ত, বরিশাল পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরামের সদস্যসচিব সুভাষ দত্ত, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।