ঢাকাবুধবার , ২ জুলাই ২০২৫

বাড়ি ছাড়লেন মুরাদনগরে নি*পী*ড়*নের শি*কা*র সেই নারী

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ২, ২০২৫ ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার সেই নারী তার বাবার বাড়ি (ঘটনাস্থল) থেকে অন্যত্র চলে গেছেন।
মঙ্গলবার (১ জুন) সকাল থেকে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে দেখা যায়নি। এমনকি ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে গিয়েও বাড়িতে পাননি মুরাদনগরের সাবেক এমপি শাহ মোফাজ্জল হোসেইন কায়কোবাদ।

তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার পর প্রতিদিনই তাদের বাড়িতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন ভিড় করছেন। এ ছাড়া গণমাধ্যমকর্মী ও ইউটিউবারদের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে দিতে তার জীবন ‘দুর্বিষহ’ হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে তিনি বাড়ি ছেড়ে গেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের আর বাড়িতে দেখা যায়নি। সোমবার বিকেলে তার স্বামীর বাড়ি যাবেন বলে বাবার বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তার মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজনও অন্যত্র চলে যান।

এ অবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার তাদের বাড়ি আসেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। তিনি এসেও ওই নারী কিংবা তার পরিবারের সদস্যদের কাউকে বাড়িতে পাননি।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কায়কোবাদ বলেন, আমি এখানে এসেছিলাম সবার সঙ্গে দেখা করতে, কথা বলতে। ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাতে। কিন্তু এসে তাদের পেলাম না। পুলিশ ও আমাদের মাননীয় উপদেষ্টা ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে এখান থেকে দূরে নিয়ে গেছে। আমি জানতে চাই, তাদের উদ্দেশ্য কি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ওই নারী তার শ্বশুর বাড়িতে গেছেন। তিনি যেতেই পারেন, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রতিদিন কতো মানুষ তার বাড়িতে আসে, নানা কথা জানতে চায়। সে যদি নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন অবশ্যই তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

কায়কোবাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য নয়, রাজনীতিবিদরা কতো কথাই বলেন। এটা তার ব্যক্তিগত মতামত। একজন নারী ধর্ষিত হয়েছেন, আমরা তার আইনগত দিকগুলো দেখছি। এতে আমাদের কোনো ঘাটতি আছে কিনা সেটা বলেন। এর বাইরে কে কি বললো তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন দিবাগত রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ধর্ষক ও ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরই মধ্যে পুলিশ ধর্ষণে অভিযুক্ত একই গ্রামের বাসিন্দা ফজর আলী ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।

তবে এ ঘটনায় নাম গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ওই নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত ফজর আলীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। প্রেমের সূত্র ধরে গোপনে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতেন ফজর আলী। বিষয়টি টের পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

এ ছাড়া স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল করিম বলেন, তাদের পরকীয়ার বিষয়টি সবাই আগে থেকেই জানে। শুনেছি ছাত্রলীগ নেতা সুমন তাদের হাতেনাতে ধরতে ফাঁদ পেতেছিল। তাদেরকে ধরার পর তো এই ঘটনাটি ঘটল।

রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই এলাকার সবাই উভয়ের পরকীয়ার বিষয়টি অবগত। ফাঁদ পেতে দুইজনকে হাতেনাতে ধরেছে এলাকাবাসী। তবে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দিয়ে জঘন্য অপরাধ করেছে তারা। আমি এ ঘটনায় জড়িত সবার উপযুক্ত শাস্তি চাই। ফজর আলীরও বিচার দাবি করছি।