ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৪ আগস্ট ২০২৫

মাস্ক পরে নামাজ পড়া জায়েজ আছে?

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ১৪, ২০২৫ ১:০৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: প্রশ্ন : আমি ঘর থেকে বের হলে রাস্তার ধুলোবালি থেকে বাঁচার জন্য মাস্ক পরে বের হই। একদিন রাস্তায় নামাজের সময় হয়ে গেলে একটি মসজিদে প্রবেশ করি এবং মাস্ক পরা অবস্থায়ই নামাজে দাঁড়িয়ে যাই। আমার ধারণা ছিল, মাস্ক পরে নামাজ পড়তে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু নামাজের পর আমার পাশের মুসল্লি বললেন, মাস্ক পরে নামাজ পড়া মাকরূহ।

তাই আমি জানতে চাচ্ছি, আসলেই কি মাস্ক পরে নামাজ পড়া মাকরূহ?

মুহাম্মদ ওয়াকার, লালবাগ, ঢাকা

উত্তর : হাঁ, বিনা ওজরে মুখ ঢেকে নামাজ পড়া মাকরূহ। হাদিস শরিফে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, أَنَّ رَسُولَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنِ السَّدْلِ فِي الصَّلَاةِ، وَأَنْ يُغَطِّيَ الرَّجُلُ فَاهُ.

অর্থাৎ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাপড় ঝুলিয়ে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন এবং (নামাজে) মুখ ঢাকতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ : ৬৪৩)

অবশ্য কোনো গ্রহণযোগ্য ওজরের কারণে মাস্ক পরে নামাজ পড়লে মাকরূহ হবে না।

প্রসঙ্গত, নামাজ প্রতিটি মুসলিমের ওপর ফরজ (বাধ্যতামূলক)। নামাজ ছাড়া ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তি অসম্ভব। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের জন্য সুনির্দিষ্ট সময়ের সঙ্গেই ফরজ করা হয়েছে’। (সুরা আন-নিসা : ১০৩) যারা নামাজের বিষয়ে উদাসীন তাদের সতর্ক করে রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘দুর্ভোগ ওই সমস্ত নামাজিদের জন্য, যারা নিজেদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।’ (সুরা আল-মাউন: ৪-৫)

নামাজ না পড়লে ভয়াবহ শাস্তি

নামাজ না পড়লে শুধু পরকালেই নয়, দুনিয়ার জীবনেও নেমে আসে অশান্তি, হতাশা, অভাব-অনটন, দুঃখ-কষ্ট। দুনিয়ার জীবনে বেনামাজির জন্য ৫টি শাস্তির কথা জানা যায় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস থেকে। ১. আল্লাহতায়ালা নামাজ ত্যাগকারীকে দুনিয়ার জীবনে সব কাজের বরকত থেকে বঞ্চিত করেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তির আসরের সালাত কাজা হয় তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ সবই যেন ধ্বংস হয়ে গেল।’ (মুসলিম : ১৩০৪) অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘নামাজ হলো ইমানদার ও কাফেরের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী। আবার যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিল তবে সে কুফরি করল।’ (তিরমিজি : ২৬২০, আবু দাউদ : ৪৬৭৮) ২. নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তির চেহারায় কোনো নূর বা উজ্জ্বলতা থাকে না। ৩. যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করে, ওই ব্যক্তি দুনিয়ার অন্যান্য ভালো কাজের কোনো পুরস্কারও পাবে না। ৪. নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তির জন্য কোনো লোক দোয়া করলে তা কাজে আসবে না। ৫. নামাজ পরিত্যাগকারী ব্যক্তি দুনিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপেই আল্লাহতায়ালা সব সৃষ্টিজীবের কাছে ঘৃণিত। কোনো সৃষ্টিজীবই তাকে পছন্দ করবে না। ৬. ইসলামের শান্তি ও প্রতিশ্রুতি থেকে বঞ্চিত হবে। (শারহুল আকিদাতুত তাহাবি : ২৬৮) হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যত্নের সঙ্গে আদায় করবেন, কেয়ামতের দিন এ নামাজ তার জন্য আলো হবে। তার ঈমান ও ইসলামের দলিল হবে এবং তার নাজাতের ওসিলা হবে। আর যে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়মিত নামাজ আদায় করবে না, কেয়ামতের বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে নামাজ তার জন্য আলো হবে না। দলিলও হবে না এবং সে আজাব থেকে রেহাইও পাবে না। (মুসনাদে আহমদ : ৬৫৭৬)