
নিজস্ব প্রতিবেদক :: ভিডিও বানাতে সেতু থেকে নদীতে লাফ, কলেজছাত্র নিখোঁজ।
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহিপুর তিস্তা সেতুতে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে সেতু থেকে নদীতে লাফ দিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন নিরব রায় উৎস (১৮) নামে এক কলেজছাত্র। শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৪টার দিকে নিরব রায় উৎসসহ তার বন্ধুরা নদীপাড়ে ঘুরতে আসেন। রংপুর সরকারি কলেজে পড়ালেখার সুবাদে একই মেসে থাকেন তারা সাত বন্ধু। সেতুতে ঘুরতে এসে বিকেল ৫টার দিকে ভিডিও কনটেন্ট তৈরির উদ্দেশ্যে তিন বন্ধু শাকিল, নিরব ও রুপম সেতু থেকে নদীতে লাফ দেন। এদের মধ্যে শাকিল ও রুপম কয়েক মিনিটের মধ্যে সাঁতরে উঠতে পারলেও নিরব তলিয়ে যান।
এরপর সঙ্গে থাকা অন্য বন্ধুরা চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গঙ্গাচড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। পরে রংপুর থেকে ডুবুরি দল এসে সন্ধ্যা থেকে নদীতে নেমে তল্লাশি কার্যক্রম শুরু করে। তবে রাত ৮টা পর্যন্ত নিরবকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
নিখোঁজ নিরব রায় উৎস নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পশ্চিম বাংলা গ্রামের বাসিন্দা তপন রায়ের ছেলে। বন্ধুরা হলেন- নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার পশ্চিম বলাগ্রামের লাভলু মিয়ার ছেলে আল আমিন (১৮), দিনাজপুরের বিরাপুর উপজেলার মাছুম আলীর ছেলে মাহাদী হাসান (১৯), গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার বেঙ্গুনিয়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে শাকিল (১৮), নীলফামারী জেলার শৈলমারী গ্রামের মহাদেব রায়ের ছেলে শ্রী শিশির রায় (১৮), দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার নূর ইসলামের ছেলে কাইফ কিফায়াত এবং নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর বড়ভিটা গ্রামের রশিদুল ইসলামের ছেলে রুপম ইসলাম (১৮)।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মহিপুর তিস্তা সেতু ও নদীপাড়ে পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ও নজরদারি নেই। নদীর প্রবল স্রোতে কেউ যেন নদীতে না নামে সে বিষয়ে পর্যটন সহায়তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
গঙ্গাচড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অতিরিক্ত স্টেশন মাস্টার আব্দুল মান্নান জানান, খবর পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। রংপুরের ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে। স্রোত বেশি থাকায় উদ্ধার কাজে সময় লাগছে। নিখোঁজকে না পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, কন্টেন্ট তৈরির জন্য নিজের জীবন বিপন্ন হয় এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ড থেকে তরুণদের বিরত থাকতে হবে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।