
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ১৭ হাজার ৮শ পিস ইয়াবা আটক হলেও ৩ হাজার ১৫০ পিস উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাকি ১৪ হাজার ৬৫০ পিস গায়েব করে ফেলেছেন অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা। বুধবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলার লাকুটিয়া সড়কে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযানে তিনজন আটক হলেও একজনের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। ওপর দুজনকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আসামি হওয়া ব্যক্তির নাম ফারদিন। তিনি বরিশাল নগরীর কালুশাহ সড়কের বাসিন্দা এবং সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের বাংলা বিভাগের অনার্সের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
অভিযানে ছিলেন নগর গোয়েন্দা শাখার ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন, সাব ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান, রাকিব হোসেন, এএসআই মহসিন, কনস্টেবল আকিদুর, রুহুল, সোহেলসহ আরও কয়েকজন।
জানা যায়, ইয়াবার চালানটি বরিশাল নগরীর মোহাম্মদপুর এলাকার মাদক বিক্রেতা মান্না সুমন ও শিল্পি। লাকুটিয়া এলাকায় প্রথমে চালানটি আটক করা হয়। দুটি মোটরসাইকেল থেকে চারটি টিউব আকারে ইয়াবা উদ্ধার হলেও ঘটনাস্থল থেকে সরে আরেকটি স্থানে সংবাদকর্মীদের খবর দিয়ে তাদের সামনে একটি টিউব আকারে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা সদস্যরা। এরপর মাদক বিক্রেতা মান্না, সুমন ও শিল্পির সঙ্গে দেন-দরবারে বসেন তারা। এরপর ১৭ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে ৩ হাজার ১৫০ পিস উদ্ধারের কথা জানিয়ে একজনের নামে মামলা দেওয়া হয়। বাকি ১৪ হাজার ৬৫০ পিস পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে মান্না সুমন ও শিল্পিকে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন ইন্সপেক্টর ছগির হোসেন। তবে এতে বাধা হয়ে দাঁড়ান কনস্টেবল আকিদুর। তিনি বলেন, ১৪ হাজার ৬৫০ পিস ইয়াবার দাম প্রায় ৩০ লাখ টাকা। সেখানে পাঁচ লাখ টাকায় কেন মান্না সুমন ও শিল্পিকে ইয়াবা দেওয়া হবে? এরপর ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা নিয়ে চলে যান গোয়েন্দা টিমের সদস্যরা। এসব কথোপকথনের সব রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়েন্দা টিমের কোনো সদস্য কথা বলতে রাজি হননি। পরে ইন্সপেক্টর ছগির হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিস্তারিত বলার পরে কোনো সদুত্তর না দিয়ে ফোনটি কেটে দেন।
এরকম ঘটনা নতুন নয়, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছেন যারা মাদকের বিশাল বিশাল চালান আটক করে অল্পকিছু মাদক দিয়ে আসামি চালান করে বিনিময়ে মাদক বিক্রেতার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেন। তাছাড়া উদ্ধার হওয়া মাদক আটক না দেখিয়ে বাইরে বিক্রি করে হাতিয়ে নেন অর্থ। এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন যেহেতু জানলাম তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।