
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল–৫ (বরিশাল সদর) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। দলের স্থানীয় নেতাদের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিংয়ের কারণে কার্যকরভাবে মনোনয়ন প্রক্রিয়া এখন থমকে আছে বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বরিশাল সদর আসন থেকে মহানগর ও জেলা কমিটির একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তবে প্রত্যেকের নিজস্ব অনুসারী ও বলয় থাকায় কেন্দ্রের কাছে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তুলে ধরা যাচ্ছে না। ফলে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রার্থীদের মূল্যায়ন ও চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশালের ছয়টি আসনের বিএনপি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ঢাকায় তলব করা হয়েছিল। গত ২৭ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান কার্যালয়ে এসব নেতাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সূত্র জানায়, বরিশাল বিভাগের ২১টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত। কিছু আসনে একাধিক প্রার্থীর নাম রাখা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনকে চূড়ান্ত করা হবে। বরিশালের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থীর খসড়া তালিকা করা হয়েছে; বড় কোনো পরিবর্তন না হলে তালিকাটি অপরিবর্তিত থাকবে।
তবে বরিশালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে বিবেচিত বরিশাল–৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন নিয়ে অমীমাংসিত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় নেতৃত্বের বিভাজনই এর প্রধান কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মজিবুর রহমান সরোয়ার, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) অ্যাডভোকেট বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন,কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ,সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁন,জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন,মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক এবংমহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাছরিনসহ আরও অনেকে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল বিএনপির মধ্যে নেতৃত্ব বিভাজন রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দলের সাম্প্রতিক কার্যক্রমেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, বরিশাল বিএনপির ঐক্যের অভাব নির্বাচনী প্রস্তুতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।বরিশাল মহানগর ও জেলা বিএনপি নিজেদের মধ্যে নিজেদের গ্রুপিং সমস্যা সমাধান না করে ঐক্য করে মনোনয়ন না নিতে পারে তবে আগামীর জন্য বিএনপির জন্য অশ্বনী সঙ্কেত হিসাবে দেখা যাবে। আওয়ামী লীগের আমলে নিষ্ক্রিয় এবং রাজনীতিকে বিদায় জানিয়ে দেশত্যাগী সুবিধাভোগী বিএনপি নেতাদের নিয়ে কোরাম ভারি করা নেতারা সব কর্মসূচিই পালন করছেন পাল্টাপাল্টিভাবে।বরিশাল রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করে বরিশাল ৫ আসনে যদি নিজেদের কোন্দল মিটিয়ে এক কাতারে আসতে পারে তাইলে ধানের শীষ মার্কার পরাজয় নিশ্চিত।
তাই কেন্দ্র নিশ্চিত করেছে আগে দলীয় কোন্দল মিটিয়ে সবাইকে এক কাতারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একজনের জন্য মনোনয়ন নেওয়ার জন্য বলেছে।তবে বরিশাল সদর আসনের জন্য কারপক্ষে মনোনয়ন চাইবে তা নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা।প্রত্যেকে আলাদা ভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, বরিশাল সদর আসনের জন্য দলীয় কোন্দল মিটিয়ে সবাইকে এক কাতারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দলীয় সমর্থন পেতে হলে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করা জরুরি। স্থানীয় পর্যায়ে বিভক্তি যতদিন থাকবে, ততদিন কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থা অর্জন করা কঠিন হবে।
তবে কেন্দ্রের এমন কড়া নির্দেশের পরও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় আসতে পারেননি। প্রত্যেকেই আলাদাভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও ধোঁয়াশাপূর্ণ করে তুলেছে।
হাতছাড়া হতে পারে আসন একাধিক তৃণমূল নেতা হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা নেতৃত্বের টানাপোড়েনের কারণে এলাকায় দলীয় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তাদের আশঙ্কা, নির্বাচনের পূর্বে এই বিভাজন দূর করে সমন্বিতভাবে মাঠে নামতে ব্যর্থ হলে বরিশাল—৫ আসনটি অনিবার্যভাবে হাতছাড়া হবে।
স্থানীয় রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের মতে, এখনই যদি বরিশাল বিএনপির নেতৃত্ব নিজেদের গ্রুপিং সমস্যা সমাধান করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা অর্জন করতে না পারে, তবে এই আসনটিতে বিএনপি’র বিজয় সুদূরপরাহত।
দলীয় সূত্র জানায়, বরিশাল–৫ আসনে মনোনয়ন পেতে হলে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করা জরুরি। স্থানীয় পর্যায়ে বিভক্তি যতদিন থাকবে, ততদিন কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থা অর্জন করা কঠিন হবে।
একাধিক তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্বের টানাপোড়েনে এলাকায় দলীয় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের আগে এই বিভাজন দূর করে সমন্বিতভাবে মাঠে না নামলে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের মতে, এখনই যদি বরিশাল বিএনপির নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধ হয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা অর্জন করতে না পারে, তাহলে বরিশাল–৫ আসনে দলটির মনোনয়ন পাওয়া কারো জন্যই সহজ হবে না।


