
নিজস্ব প্রতিবেদক :: আ.লীগের ঝটিকা মিছিলে গেলে ৫ হাজার টাকা, ব্যানার ধরলে মিলছে ৮ হাজার!
সরকার পতনের পর নিষিদ্ধ হওয়া রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলগুলোতে অর্থের বিনিময়ে কর্মী-সমর্থক আনার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা এবং ব্যানার ধরার জন্য ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। শুধু রাজধানী নয়, এসব ঝটিকা মিছিলে অংশ নিতে কর্মী-সমর্থকদের আনা হচ্ছে বিভিন্ন জেলা থেকেও।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলতি বছরের মে মাসে সংগঠনটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। এরপরও রাজধানীর সড়কসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের ঝটিকা মিছিল দেখা যাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঝটিকা মিছিলগুলো থেকে ককটেল ফাটিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো এবং কোথাও কোথাও বাস লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ার মতো নাশকতামূলক ঘটনাও ঘটেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচির আড়ালে নাশকতার উদ্দেশ্যেই এসব কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদে অর্থের বিনিময়ে অংশগ্রহণের এই তথ্য জানা গেছে।
তিনি বলেন, “জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী যারা মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ করে শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে, এমন যাদের শনাক্ত করা হয়েছে তাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি। যারা তাদের আশ্রয় দিচ্ছে, ইন্ধন দিচ্ছে, অর্থ সহায়তা দিচ্ছে তাদেরও আমরা আইনের আওতায় আনছি।”
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, নাশকতার অভিযোগে এসব ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়ার অপরাধে গত ১০ মাসে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষকরা এই অর্থ লেনদেনের ঘটনায় বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা বা হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক মনে করেন, “পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধ্যমতো অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। তারা শুধু গ্রেপ্তারই করতে পারবে, কত গ্রেপ্তার করবে।”
তিনি নির্বাচনের আগে জনমনে স্বস্তি ফেরাতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল বা সংগঠনের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।


