
নিজস্ব প্রতিবেদক :: রাজশাহীর বাগমারায় ইভা খাতুন (১৭) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৩ নভেম্বর) উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের বাজেকোলা গ্রাম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার (২৪ নভেম্বর) বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ইভা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার আলিপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে। বাগমারার যোগীপাড়া ইউনিয়নের বাজেকোলা গ্রামের প্রবাসী রফিকুল ইসলামের ছেলে কায়েস হোসেনের (১৭) সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোচিং করতে গিয়ে পরিচয় হয় কায়েস ও ইভার। সেই পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে উভয়ের বয়স কম হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাদের বিয়েতে রাজি হয়নি। এরপর তারা দুজন কিছুদিন পালিয়ে ছিল এবং পরে রেজিস্ট্রি ছাড়াই নিজেরা বিয়ে করে ফেলে।
জানা যায়, গত বছর কায়েস জেলার দুর্গাপুর উপজেলার সূর্যভাগ এলাকার একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। সেখানে সে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকত। একই কোচিংয়ে স্থানীয় বেলঘরিয়া স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ইভা খাতুনও পড়ত। সেখানেই তাদের পরিচয় থেকে প্রেম হয়। দুজনেরই বয়স কম এবং তারা একই ক্লাসে পড়ত, তাই পরিবার থেকে তাদের বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। এরপর তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে।
গত ১৫ দিন আগে তারা কায়েসের বাজেকোলার বাড়িতে আসে। কিন্তু কায়েসের মা তাদের মেনে নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিবেশী জানান, বাড়িতে আসার পর থেকেই কায়েসের মা তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ইভা এবং কায়েসকে বাড়িতে কিছু খেতেও দেওয়া হয়নি।
তাদের বাড়ির পাশের এক বৃদ্ধ মুদি দোকানি জানান, সকালে কায়েস তার দোকান থেকে কিছু খাবার জিনিস কিনে নিয়ে যায়। জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, গতকাল থেকে বাড়িতে তাদের খেতে দেওয়া হয়নি। এই খাবারগুলো তারা দুজন খাবে। এরপর কায়েস পাশের গ্রামে অন্য এক লোকের কাজে চলে যায়। এ বিষয়ে কায়েস এবং তার পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে নিহত ইভার বাবা দুর্গাপুর উপজেলার আলিপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, এতদিন মেয়ে এবং জামাই তার বাড়িতেই থাকত। গত কয়েকদিন আগে তারা কায়েসের বাড়িতে আসে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে পাশের বাড়ির এক মহিলা সুন্নতে খাৎনার মাংসের ভাগ দিতে বাড়িতে ঢুকলে ইভাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে লাশ নামিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাগমারা থানার এসআই সোহেল রানা বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে গলায় একটি দাগ পাওয়া গেছে। তবে শরীরের অন্য কোথাও কোনো দাগ পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি সন্দেহজনক।
বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে রেখেই আমরা লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা আবুল হোসেনের উপস্থিতিতে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।


