নিজস্ব প্রতিবেদক :: দ্বিতীয় দিনের বাস ধর্মঘটে অচল বরগুনা।
পরিবহন নেতাকে মারধর ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় বরগুনার দ্বিতীয় দিনের মতো মঙ্গলবারও (২৩ জানুয়ারি) বাস ধর্মঘট চলছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
এর আগে সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকরা।
সকালে বরগুনা থেকে নীলফামারীগামী যাত্রী হেলালী বলেন, জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা হয়ে নীলফামারী যেতে চাই। কিন্তু বাস চলাচল করছে না। ভীষণ সমস্যায় পড়েছি। অথচ আমারা না গিয়েও উপায় নেই। কনকনে এই ঠান্ডার মধ্যে কি যে সমস্যায় পড়েছি তা বলে বোঝাতে পারবো না।
সালমা নামে এক যাত্রী বলেন, জরুরি প্রয়োজনে আমার বরিশাল যেতে হবে। কিন্তু যাওয়ার কোনো উপায় নেই। বরগুনা বরিশাল রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় গতকাল আমি ছয়বার গাড়ি পরিবর্তন করে বরিশাল গিয়েছি। রাতে ট্রাকে করে আবার বরগুনা ফিরতে হয়েছে। ঠান্ডায় শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এ অবস্থায় আমরা যাত্রীরা ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি।
নিসাত নামে আরেক যাত্রী বলেন, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভোর ৫টায় শিশু সন্তান নিয়ে বাড়ি থেকে বাস টার্মিনালে এসেছি। এখানে এসে জানতে পারলাম বাস ধর্মঘট। কনকনে এই ঠান্ডায় এ রকম বাস ধর্মঘট দিলে আমাদের কষ্টের সীমা থাকে না।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতি গ্রুপের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম কবির বলেন, সংগঠনের অফিসে বসা অবস্থায় আমাদের সাধারণ সম্পাদককে মারধর করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে অফিস। এ ঘটনার পর বাস মালিক এবং শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা নিজেরাই এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। বিষয়টিকে আমরা কোনোভাবেই হেলায় উড়িয়ে দিতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেই আসামিদের গ্রেফতার এবং এ ঘটনায় জড়িত বরগুনা জেলার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান শিপন জোমাদ্দারকে সংগঠনের পদ থেকে অব্যাহতি না দেয়া পর্যন্ত আমাদের ধর্মঘট চলবে।
গত রোববার (২১ জানুয়ারি) রাতে বরগুনা জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে হামলার শিকার হন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. সগীর হোসেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয় কার্যালয়টি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বরগুনা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান শিপন জোমাদ্দারকে।
হামলার ঘটনায় সোমবার দুপুরে বরগুনা সদর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী সগীর হোসেন। বাস মালিক ও শ্রমিকদের দাবি, মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান শিপন জোমাদ্দারকে সংগঠনের পদ থেকে অব্যাহতি না দেয়া পর্যন্ত চলবে এ ধর্মঘট।