নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে সাশ্রয়ী মূল্যে বসুন্ধরার পণ্য, খুশি ক্রেতারা
গত বছরের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ভোগ্যপণ্য বিক্রি করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ বসুন্ধরার পণ্য, ভোক্তার জন্য’ স্লোগানকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো বরিশালেও এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
গত বুধবার থেকে নগরের ব্যস্ততম এলাকা সিএন্ডবি রোডের আমতলার মোড় এলাকায় বসুন্ধরার পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু থেকেই পণ্য কিনতে সাধারণ মানুষের আগ্রহ ও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে নগরের আমতলার মোড় মডেল মসজিদ লেকের পশ্চিমপ্রান্তে বসুন্ধরা গ্রুপের সাশ্রয়ী মূল্যের পণ্য বিক্রির একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ট্রাকটিতে ৩১টি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রির তালিকা টানানো রয়েছে, যা দেখে ক্রেতারা চাহিদা অনুযায়ী তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনতে পেরে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী সোলায়মান গাজী বলেন, এত বড় প্রতিষ্ঠান হয়েও বসুন্ধরা রমজানে বেশ উদারতার পরিচয় দিল। সবাই যেখানে রমজানে দাম বৃদ্ধি করার পাঁয়তারা করে, সেখানে বসুন্ধরা গ্রুপ সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে। তাদের মতো অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে আমাদের সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও লাঘব হতো।
সোনিয়া নামে এক গৃহিণী বলেন, সয়াবিন তেলের দাম কমেছে শুনেছি, কিন্তু রমজানে কেউ কম দামে বিক্রি করে না। ভালো কোম্পানির সয়াবিন তেল কম দামে পাব ভাবতেও পারিনি। বসুন্ধরা আরও বড় হোক এবং তাদের মানুষের পাশে দাঁড়ানো এ ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকুক, সেই কামনা করি।
হার্ডওয়্যার দোকানি মোস্তাক, দিনমজুর রাসেল হোসেন, বেসরকারি চাকরিজীবী রফিকুল ইসলাম, রং মিস্ত্রী সুমন খানসহ আরও অনেক ক্রেতা বসুন্ধরার ট্রাক থেকে পণ্য কিনে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, রমজানে বাজারে অনেক কিছুর দামই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এ রকম অবস্থায় বসুন্ধরার এমন উদ্যোগ সাধারণের মধ্যে স্বস্তি এনেছে। এখানে স্বাভাবিক বাজারের মূল্য তালিকা ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রির তালিকাও রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ পণ্য কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন, লাভবান যে হচ্ছেন তাও বুঝতে পারছেন।
জানা গেছে, এ বছর ট্রাক সেলের মাধ্যমে এক লিটার সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকার পরিবর্তে ১৫৫ টাকা, দুই লিটার সয়াবিন তেল ৩২৬ টাকার পরিবর্তে ৩১০ টাকা, তিন লিটার সয়াবিন তেল ৪৮৮ টাকার পরিবর্তে ৪৬৫ টাকা, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৭৬৫ টাকা, আট লিটার সয়াবিন তেল ১২৮০ টাকার পরিবর্তে ১২২৫ টাকা, এক লিটার সরিষার তেল ৩৬০ টাকার পরিবর্তে ২৬৫ টাকা, এক কেজি আটা ৬৫ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা, এক কেজি ময়দা ৭৫ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা, ২৫০ গ্রাম সুজি ২৫ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা, এক কেজি মসুর ডাল ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৪০ টাকা, এক কেজি চিনিগুঁড়া চাল ১৮০ টাকার পরিবর্তে ১৪১ টাকা, ২০০ গ্রাম সেমাই ৩০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা, ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই ৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, ইনস্ট্যান্ট মাসালা নুডলস (৮ প্যাক) ১৪০ টাকার পরিবর্তে ১১০ টাকা, ১৫০ গ্রাম স্টিক এগ অ্যান্ড চিকেন নুডলস ২৫ টাকার পরিবর্তে ২২ টাকা, ৩০০ গ্রাম পান্ডা অথেনন্টিক চাইনিজ নুডলস ৬০ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা, ২০০ গ্রাম সি-শেল পাস্তা ৫০ টাকার পরিবর্তে ৩৭ টাকা, ২০০ গ্রাম ম্যাকারন অ্যাসরটেড ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম হলুদের গুঁড়ার প্যাকেট ২৪০ টাকার পরিবর্তে ১৭৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম মরিচের গুঁড়ার প্যাকেট ৪১০ টাকার পরিবর্তে ৩১৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম ধনিয়ার গুঁড়ার প্যাকেট ২৪০ টাকার পরিবর্তে ১৭৫ টাকা, ৫০০ গ্রাম জিরার গুঁড়ার প্যাকেট ৯০০ টাকার পরিবর্তে ৭৭৫ টাকা, ২০০ গ্রাম হালিম মিক্স ৫৫ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, ১০০ গ্রাম মুরগির মসলা ৭৮ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা, ৪০ গ্রাম বিরিয়ানির মসলা ৬০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, ১০০ গ্রাম গরুর মাংসের মসলা ৮৪ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, ৫০ গ্রাম কাবাব মসলা ৯০ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, ৫০ গ্রাম বোরহানি মসলা ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা, ৫০ গ্রাম চটপটি মসলা ৪০ টাকার পরিবর্তে ৩২ টাকা, ২০০ গ্রাম বসুন্ধরা চা (প্রিমিয়াম) ১১০ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকা, ১০০ গ্রাম বসুন্ধরা প্রিমিয়াম টি ব্যাগ ৯০ টাকার পরিবর্তে ৬৫ টাকায় বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডিভিশনাল সেলস ম্যানেজার মো. আমিনুল ইসলাম ও এরিয়া সেলস ম্যানেজার মো. আরিফুর রহমান জানান, গত ১৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সাশ্রীয় মূল্যে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলবে গোটা রমজান মাসজুড়ে। শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। যে যার প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য কিনে নিচ্ছেন এবং খুশি হয়ে সন্তুষ্টির কথাও প্রকাশ করছেন।
বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লি. ফুড ডিভিশনের রিটেইল সেলস অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মাহামুদুল হাসান জানান, ক্রেতাদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ভালো মানের পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে পেয়ে খুশি ক্রেতারা। সাধারণ মানুষের আগ্রহ বলে দিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের এ উদ্যোগ কতটা মহৎ।