
দশমিনা প্রতিনিধি :: পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ূন কবীরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পূনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে। পটুয়াখালী-০৩ আসনের অস্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান খান সমর্থিত ইউনিয়ন যুবদলের একাংশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার জন্য গণসংযোগ চালান। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করবেন এমন শর্তে প্রথমে তৎকালীন পটুয়াখালী-০৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদার সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার প্রস্তুতি নেন এবং শাহজাদার পরিবারের সদস্যদের সাথে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। চেয়ারম্যান পদে ইউপি নির্বাচন করার জন্য এমপি শাহজাদার সমর্থন পেলেও তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নিজ অনুসারীদের সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হলে এমপির চাচাতো ভাই সুমন সরদারের সাথে ব্যবসা শুরু করেন।
সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী এস এম শাহজাদার নির্বাচনী প্রচারে অংশ গ্রহন করেন। ২০২৪ সালে কোটা বিরোধী আন্দোলন কেন্দ্র করে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংসদ বাতিল করলে এমপি পদ হারিয়ে আত্মগোপনে চলে যান এমপি শাহজাদা। এমপি শাহজাদা তার আপন ও চাচাতো ভাইসহ পরিবারের লোকজন আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছিলেন হুমায়ুন কবির। তাছাড়া গত ৫ আগস্টের পর ঐ ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি আশরাফ হোসেন মৃধা পলাতক সাবেক এমপি এস এম শাহজাদা, যুবলীগের ক্যাডার সুমন, রিপন, রুবেল, শাহিন, কামালসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলা দায়েরর পর হুমায়ূন কবির আশরাফ হোসেন মৃধাকে ঢাকায় খবর দিয়ে নিয়ে যাত্রাবাড়ীর একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে যান, সেখানে মামলার আসামীরা উপস্থিত হয়ে আশরাফ হোসেনকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। এক পর্যায়ে হুমায়ুন কবির আসামীদের পক্ষ হয়ে আশরাফ হোসেন মৃধাকে মামলা তুলে নিতে ৮ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলেন। আশরাফ রাজি না হলে ভবিষ্যতে এর পরিণাম কি হবে ভেবে জানাতে বলেন।
স্থানীয় বিএনপি ও অংগ সংগঠনের নেতারা জানান ২০১৮ সালের নির্বাচনে সাবেক সিইসি নুরুল হুদা তার ভাগ্নে এক সময়ের বিএনপি কর্মি শাহজাদা হঠাৎ আওয়ামী লীগের মনোনায়ন পাইয়ে দিয়ে রাতের ভোটে এমপি বানান। শাহজাদা এমপি হওয়ার পর থেকে হুমায়ুন কবির গোপন সম্পর্ক গড়ে শাহজাদার ভাই, চাচাতো ভাইদের সাথে ঠিকাদারি ব্যবসা, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ, বিভিন্ন হাট, ঘাটের ইজারা কমিশন নিয়ে বিপুল অর্থের মালিক হন। এদিকে স্থানীয় যুবদলের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হলে আবার বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন হুুমায়ুন কবীর। তিনি যুবদলের সভাপতি হতে মরিয়া হয়ে ওঠেন, ঘন ঘন যাতায়াত শুরু করেন পটুয়াখালী ০৩ আসনের বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রিয় নেতা হাসান মামুনের বাসায়। হুমায়ূন কবীরের এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
এব্যাপারে হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি জানান তিনি ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে যুক্ত আছেন বর্তমানে তিনি যুবদলের সভাপতি প্রার্থী এবং ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা। তার সম্পর্কে কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুন অবগত আছেন তাই এসব মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে কোন লাভ হবেনা।