
নিউজ ডেস্ক :: ভবন তৈরি শেষেও বিদ্যুতের সাবস্টেশন নির্মাণে বরাদ্দ ও জনবল সংকটে এক বছরের বেশি সময় ধরে অচল পড়ে থেকে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে ২০০ শয্যার বরিশাল শিশু হাসপাতাল। তাই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের শিশু রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের শিশু বিভাগে ধারণ ক্ষমতার সাতগুণ রোগী ভর্তি থাকায় সেখানেও যথাযথ সেবা মিলছে না।
তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ নিশ্চিত করে এই হাসপাতাল চালুর দাবি উঠেছে। ১৯৬৪ সালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র স্বতন্ত্র শেবাচিম হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো স্বতন্ত্র চিকিৎসাসেবাকেন্দ্র পায়নি এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। তাই ২০১৭ সালে আরেকটি স্বতন্ত্র চিকিৎসাকেন্দ্র হিসাবে নগরীর আমানতগঞ্জে বরিশাল শিশু হাসপাতালের ভবন নির্মাণ শুরু হয়।
এরপর ২০১৯ সালে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানান জটিলতায় ২০২৪ সালের মার্চ মাসে নির্মাণকাজ শেষ হয়। এরপর গণপূর্ত বিভাগ ভবন চালু করতে অন্যান্য কাজ শেষে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিতে সব কাজ সম্পন্ন করে রেখেছে। কিন্তু প্রথম প্রকল্পে ওই হাসপাতালের বিদ্যুৎ সরবরাহে সাবস্টেশন নির্মাণের বরাদ্দ ছিল না। তাই সাবস্টেশন নির্মাণ করতে পারেনি গণপূর্ত বিভাগ। এছাড়া এ হাসপাতাল পরিচালনায় কমপক্ষে সাড়ে তিনশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রয়োজন হলেও এখন পর্যন্ত কাউকেই নিয়োগ দেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তাই উন্নত সেবা পেতে শিশুদের অভিভাবকরা ছুটে যাচ্ছেন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে। কিন্তু সেখানকার ৬০ বছরেরও বেশি সময়ের পুরোনো অবকাঠামোর মধ্যে চলমান থাকা শিশু ওয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৭২ রোগীর। কিন্তু রোগীর চাপ এতটাই যে, হাসপাতালে সব সময় ধারণ ক্ষমতার ৬ থেকে ৭ গুণ বেশি রোগী অবস্থান করছে। শিশু হাসপাতাল অচল অবস্থায় পড়ে থাকায় চুরি হচ্ছে সরকারি টাকায় কেনা মালামাল।
রোগীর স্বজন নগরীর কাউনিয়ার বাসিন্দা মজিবর মোল্লা বলেন, শেবাচিম হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ অত্যধিক। তাই এখানে শিশু সুস্থ হওয়ার চেয়ে আরও অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। যথাযথ সেবা নিশ্চিতে দ্রুত শিশু হাসপাতাল চালুর দাবি জানান তিনি। বরিশাল সচেতন নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ডা. মিজানুর রহমান বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে শিশু রোগীদের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে।
তাই স্বতন্ত্র শিশু হাসপাতাল চালুর সময় এখনই। রোগীদের ভোগান্তি দূর করতে ত্বরিত গতিতে এসব সংকট দূরের দাবি জানান তিনি। শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মশিউল মুনীর বলেন, জনবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালটি চালু করতে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ সচিবদের সঙ্গে রোববার কথা বলেছি। তারা ৬ মাসের মধ্যে হাসপাতাল চালুর কথা জানিয়েছে।
বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, প্রথম প্রকল্পে এখানে সাবস্টেশন নির্মাণের বরাদ্দ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। চলতি বছরের নতুন প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ এলেই সাবস্টেশন নির্মাণকাজ শেষ হবে।