ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩১ জুলাই ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চিকিৎসক হওয়ার স্ব প্ন থেকে ছি*ট*কে পড়ছেন পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ৩১, ২০২৫ ১:২১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাইগ্রেশন শেষে ক্লাস শুরু হয়েছে। এখনো সরকারি পর্যায়ের মেডিকেল কলেজগুলোতে শতাধিক আসন শূন্য রয়েছে। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে শূন্য আসনের সংখ্যা সাড়ে চারশর বেশি। এর আগের শিক্ষাবর্ষে চতুর্থ মাইগ্রেশন চালু হলেও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সের ভর্তিতে চতুর্থ মাইগ্রেশন হচ্ছে না। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর শূন্য আসন পূরণে নতুন করে সুযোগ না দিতে অনড় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন থেকে ছিটকে পড়ছেন পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। আরও একবার সুযোগ দিলে এসব শূন্য আসনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এসব শিক্ষার্থী সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেতেন। সরকারি মেডিকেল কলেজে চতুর্থ মাইগ্রেশন আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পর্যায়ের ভর্তি চালু না হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সেকেন্ড টাইমার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা বলেছেন, সারা দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজে এখনো পাঁচ শতাধিক আসন শূন্য রয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থী কোটার প্রায় অর্ধেক আসন ফাঁকা রয়েছে। এসব আসন সমন্বয় করে চতুর্থ মাইগ্রেশন চালু করলে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

এসব শূন্য আসনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে মেধাতালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন বাদ পড়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী রাবিনা বলেন, অপেক্ষমাণ থেকে আর মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা গেলেই আমি সরকারি মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেতাম। চতুর্থ মাইগ্রেশন এবং অপেক্ষমাণে সুযোগের অপেক্ষায় থেকে বেসরকারি কোনো মেডিকেলে ভর্তি হইনি। এখন বেসরকারি মেডিকেলও ভর্তির সুযোগ নেই। এই অবস্থা থেকে আমাদের উত্তরণের জন্য শূন্য আসনের বিপরীতে ভর্তির সুযোগ চাই।

জানা যায়, প্রতিবছর মেডিকেল কলেজে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে শূন্য আসনে ভর্তির জন্য মাইগ্রেশনের সুযোগ দেওয়া হয়। এ বছর নীতিমালার দোহাই দিয়ে সে সুযোগও দিতে গড়িমসি করছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। অথচ নীতিমালায় না থাকলেও প্রতি বছরই চার থেকে পাঁচটি মাইগ্রেশনের সুযোগ পেয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ বছরও শিক্ষার্থীরা আশায় ছিলেন আর একটি মাইগ্রেশন হলে তারা নিজ এলাকার কাছাকাছি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবেন। তা ছাড়া তৃতীয় মাইগ্রেশনে সীমিত আকারে কলেজ পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়ায় বহু শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত কলেজে স্থানান্তরের সুযোগ হারিয়েছেন। নতুন করে আরও একবার মাইগ্রেশনের সুযোগ দিলে শতাধিক শিক্ষার্থীর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতো।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দীন মাতুব্বর বলেন, চতুর্থ মাইগ্রেশনের বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। মেডিকেল শিক্ষাবিষয়ক নীতিমালা তৈরি করে বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল)। আমরা শুধু বাস্তবায়ন করি। এটা পুরোপুরি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়।

জানা গেছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে চতুর্থ মাইগ্রেশনের আওতায় ৯৯ শিক্ষার্থী সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ৭৬ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। কিন্তু চলতি বছর দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাইগ্রেশন শেষে চতুর্থ মাইগ্রেশন চালু করার প্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছে মন্ত্রণালয়। ফলে ভর্তিবঞ্চিত হচ্ছেন শতাধিক শিক্ষার্থী।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলনে, সরকারি মেডিকেল কলেজে চতুর্থ মাইগ্রেশন আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় পর্যায়ের ভর্তি করার এখতিয়ার পুরোপুরি মন্ত্রণালয়ের। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে বেশকিছু আসন শূন্য রয়েছে। তবে এখানে অধিদপ্তরের কিছুই করার নেই। মন্ত্রণালয় যদি অনুমতি দেয় এবং ভর্তি সংক্রান্ত সফটওয়্যার সিস্টেম খুলে দেয় তাহলে আরও কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেতে পারেন।