ঢাকাবুধবার , ৫ নভেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্কুল ফিডিংয়ের দুধ যাচ্ছে শিক্ষকদের পেটে : ক্ষোভে ফুঁসছে উঠেছে অভিভাবকরা ও এলাকাবাসী

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
নভেম্বর ৫, ২০২৫ ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: স্কুল ফিডিংয়ের দুধ যাচ্ছে শিক্ষকদের পেটে : ক্ষোভে ফুঁসছে উঠেছে অভিভাবকরা ও এলাকাবাসী।

অভিযোগ অনুযায়ী, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কিছু শিক্ষক অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর নাম দেখিয়ে সরকারি স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচির দুধ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

 

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার তেলিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ দুধ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কিছু শিক্ষক অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর নাম দেখিয়ে সরকারি স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচির দুধ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

 

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘দুধ পান কর্মসূচি’। পুষ্টি ঘাটতি দূর করা ও বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বাড়াতে সপ্তাহে পাঁচ দিন শিক্ষার্থীপ্রতি ২০০ মিলিলিটার দুধ সরবরাহের কথা। কালাইয়ের তেলিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও এই কর্মসূচির আওতায় রয়েছে।স্কুল সাপ্লাই

তবে অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ে নিবন্ধিত ৮২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত ৩৮ জনের নাম যুক্ত করে প্রতিদিন ১২০ জনের নামে দুধ তুলছেন। এ জন্য উপস্থিত শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর শিটে জাল সই করিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে জমা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ৬ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটির দিনেও শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর দেখিয়ে দুধ তোলা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত উপস্থিত শিক্ষার্থী সংখ্যা গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অথচ রিপোর্টে দেখানো হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ।

 

একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক এমন শিক্ষার্থীর নাম যুক্ত করেছেন যারা স্থানীয় নয়, এমনকি কখনও স্কুলে আসে না। সেই শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দুধ কিছু শিক্ষক ব্যাগে করে বাড়ি নিয়ে যান।

অভিভাবক রমজান আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত রোববার স্কুলে ৫৩ জন শিশু ছিল, অথচ দুধ এসেছে ১১০ জনের নামে। বাকি দুধ শিক্ষকরা নিজেদের জন্য নিয়ে গেছেন।

প্রধান শিক্ষক উদয় চন্দ্র পাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৯০–৯৫ জনের জন্য দুধ আসে, উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। বন্ধের দিন দুধ তোলার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

 

তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল আলম বলেন, যদিও প্রকল্পটি প্রাণিসম্পদ দপ্তরের আওতায়, তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম ঠেকাতে তদারকি কমিটি গঠন করা হবে।

স্থানীয়দের মতে, শিশুদের পুষ্টির জন্য সরকারের মানবিক এই উদ্যোগে শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করলে কর্মসূচির উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে।