
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল সদর উপজেলার ৩নং চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড চরআবদানী গ্রামের পূর্ব দিকে চরমোনাইয়ের অংশে পদ্মা ব্রিক ফিল্ডের পাশে নির্মাণাধীন ব্রিজটির কাজ দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। তিন–চার বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় চলমান থাকলেও ব্রিজটি এখনও দৃশ্যমান হয়নি। বরং ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। ব্রিজটির কাজ থমকে থাকার কারণে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ। চিকিৎসা, কর্মজীবী মানুষের চলাচল, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া, সবই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ- আশপাশের মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল এই ব্রিজ। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে নির্মাণ কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।
স্থানীয়দের ভাষায়- “এই ব্রিজটা যেন অভিশপ্ত একটি পোল। তিন-চার বছর ধরে কাজ চলে, আবার বন্ধ হয়। ৫ আগস্টের পরে তো সম্পূর্ণ বাতিল করে দিলো। আমাদের কষ্টটা কেউ দেখে না।”
ব্রিজ নির্মাণ কাজে ধীরগতির কারণে জনগণের দুর্ভোগ বাড়লেও এর দায়ভার নিতে কেউই সামনে আসছে না বলে অভিযোগ তাদের।
চলাচলের সুবিধার্থে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় দুই বছর আগে সাময়িক ব্যবস্থায় একটি কাঠের ব্রিজ তৈরি করে দেয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সেটি ভেঙে গেলে স্থানীয়রাই নিজেদের অর্থে ও শ্রমে বারবার মেরামত করে চলাচল সচল রাখেন।
তৌহিদুল ইসলাম জুয়েল বলেন- “ঠিকাদার কাঠের ব্রিজ দিছিলো, সেটা ভাঙলে আমরাই ঠিক করেছি। এখন তো পুরোপুরি ভেঙে গেছে। রোগী নিয়া যেতে পারেন না, বাচ্চারা স্কুলে যায় ঝুঁকি নিয়ে। এভাবে আর কত?”
কাঠের ব্রিজটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ায় এখন পথচারীদের গর্তাকৃতির অংশ পার হতে ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। বর্ষার সময় এই দুর্ভোগ বহুগুণ বাড়ে। ব্যাটারি চালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, এমনকি সাইকেলও চলাচল করতে পারছে না।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, টেন্ডার জটিলতা, তদারকির অভাব ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ব্রিজ নির্মাণ কাজ বছরের পর বছর ঝুলে আছে। তারা দ্রুত নতুন করে প্রকল্প অনুমোদন ও নির্মাণকাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় মাসুদ হাসান সাগর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- “ব্রিজ না থাকায় গ্রামের মানুষ যেন বন্দি। এটা শুধু একটি ব্রিজ নয়, জীবনযাত্রার লাইনটাই বন্ধ হয়ে আছে।”
চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ শাহালোম শেখ বলেন, “ব্রিজের কাজ দীর্ঘসময় ধরে থেমে থাকায় আমরা স্থানীয়ভাবে বারবার তদারকি করেছি। ৫ আগস্টের পরে প্রকল্প বাতিল হলেও আমরা নতুনভাবে তহবিল ও ঠিকাদার ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের চেষ্টা করব।”


