
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্টের ইনচার্জ মো. রাকিবুল ইসলাম জানিয়েছে, প্ল্যান্টটি প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার লিটার, অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার লিটার অক্সিজেন উৎপাদনে সক্ষম। যা দিয়ে জেলার সব সরকারি হাসপাতালের চাহিদা মেটানো সম্ভব। কিন্তু উৎপাদন হয় দৈনিক মাত্র ৫ হাজার লিটার।
তিনি আরও জানান, প্ল্যান্টটি দিয়ে ১ লিটার অক্সিজেন উৎপাদনে খরচ হয় মাত্র ২ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কিনতে হচ্ছে ৪৫ টাকা লিটার দরে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘স্পেক্টা ও লিনদে’ এর কাছ থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অক্সিজেন কিনেছে এক কোটি টাকার। আর জেলার ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স খরচ করেছে ১৫ লাখ টাকার বেশি।
যার মধ্যে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুই হাজার ২০০ লিটার অক্সিজেন ক্রয় করেছে ৯৫ হাজার ৫০০ টাকায়।
হিজলায় দুই হাজার ৪০০ লিটারে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা। বানারীপাড়ায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৯০০ টাকা খরচ হয়েছে ২৮০০ লিটার অক্সিজেন ক্রয় করতে।
মেহেন্দীগঞ্জে ৩ হাজার ৫৬ লিটার অক্সিজেনে খরচ হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৯২ টাকা।
মুলাদীতে ২ হাজার ৭২০ লিটার অক্সিজেনে খরচ হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৬ টাকা, বাকেরগঞ্জে ২ হাজার ৭৬০ লিটারে খরচ হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ১৭৬ টাকা। উজিরপুরে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে ২ হাজার ৩৪ লিটার অক্সিজেনে।
বাবুগঞ্জে ৩২ হাজার ৬৫২ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে ৭’শ ২৭ লিটার, আগৈলঝাড়ায় ৫’শ ১০ লিটার অক্সিজেন ক্রয় করা হয়েছে ২০ হাজার ৯৪০ টাকায়।
আর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কোটি টাকায় কিনেছে দুই লাখ ২২ হাজার ৩’শ লিটার অক্সিজেন। খোদ বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অক্সিজেনের জন্য খরচ করেছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা।
বরিশাল সিটিজেন সিনিয়র ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মিজানুর রহমান বলেন, নিজস্ব ব্যবস্থাপনা থাকলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অক্সিজেন ক্রয় করায় সরকারি অর্থের অপচয়ের পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে রোগীদের।
বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. এস এম মনজুর-এ-এলাহী জানিয়েছেন, চুক্তির কারণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অক্সিজেন ক্রয় করা হয়েছে। বর্তমানে মৌখিকভাবে অক্সিজেন ক্রয় বন্ধ রয়েছে।
বরিশালে অক্সিজেন উৎপাদনের প্ল্যান্ট রয়েছে সে বিষয়ে অবগত নন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর।
তিনি জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল এর অন্তর্ভুক্ত জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে ২৯টি পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্টের মধ্যে বরিশাল সদর হাসপাতালে ২০২৪ সালের অক্টোবরে একটি পিএসএ প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়।


