নিউজ ডেস্ক :: মৃতদেহ-আর্তনাদ-নির্মমতা দেখে, মৃত্যুবরন করেন পুলিশ সদস্য
ভারতের উত্তর প্রদেশে মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে একটি ধর্মীয় সমাবেশে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ১২০ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনায় ভয়াবহতায় শোকে স্তব্ধ গোটা ভারত। এর মধ্যেই জানা গেল, হৃদয়বিদারক ওই ঘটনার পর হাসপাতালের মর্গে সারি সারি মৃতদেহ, স্বজনহারাদের গগনবিদারী আর্তনাদ- এসব দেখে আর সইতে পারেননি কনস্টেবল রবি কুমার। হঠাৎই মাথা ঘুরে পড়ে যান। দ্রুত তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও ২০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয় তার। খবর ডব্লিউআইওএনের।
মঙ্গলবার বিকেলে হাথরাস জেলার রতি ভানপুর গ্রামে হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে। ধর্মীয় ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত এক ধর্মগুরু। তার লাখো অনুসারীরা ওই আয়োজনে গিয়েছিলেন। তবে ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা ভোলে বাবা।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ইতোমধ্যে দায়ের হয়েছে এফআইআর। কিন্তু জানা গেছে, সেখানে স্বঘোষিত ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ হরির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এফআইআরে রয়েছে ভোলে বাবার ‘মুখ্য সর্দার’ অর্থাৎ তার ঘনিষ্ঠ সহকারীর নাম। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, অনুমতি নেয়ার সময় আয়োজকরা ওই ‘সৎসঙ্গ’ বা সভায় উপস্থিত প্রকৃত মানুষের সংখ্যা লুকিয়েছিলেন। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্মীয় ওই আয়োজনে ৮০ হাজার মানুষ জড়ো হবে বলে অনুমতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু জমায়েত ছিল আড়াই লাখের বেশি মানুষের।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, ধর্মগুরুর ‘পায়ের ধুলা’ নেয়ার জন্য এগিয়েছিলেন অনেক ভক্ত। তখনই গুরুর দেহরক্ষীরা তাদের বাধা দেন, এমনকি ঠেলে সরানোর চেষ্টাও করেন। তখনই ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এরপর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এর পরই একের পর এক মৃতদেহ আনা হয় হাসপাতালের মর্গে। সেই সঙ্গে স্বজনহারাদের কান্নার রোল আর আহজারী, সব মিলিয়ে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছিল। ওই মেডিকেল কলেজের মর্গেই মোতায়েন ছিলেন দুই পুলিশকর্মী, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন রবি কুমার।
তার সহকর্মীরা জানান, মর্গে এত মৃতদেহ দেখে অস্বস্তি বোধ করছিলেন রবি। পদদলিত মৃতদেহ, রক্ত, আর্তনাদ দেখে বিচলিত হয়ে বারবার পায়চারি করছিলেন। এরপর আচমকাই অসুস্থ বোধ করেন। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। যদিও ২০ মিনিট পরই মৃত্যু হয় তার। চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই পুলিশকর্মীর।