নিজস্ব প্রতিবেদক :: পিরোজপুরে ছেলের হাতে নৃশংসভাবে মা খুন
পিরোজপুরের নাজিরপুরে ছেলের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন মা জুতিকা বালা (৫০)। এ ঘটনায় মামলার ৪ ঘণ্টার মধ্যে ছেলে জ্যোতিষ বালাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত সড়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জুতিকা বালা উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের উত্তর জয়পুর গ্রামের নারায়ন বালার স্ত্রী ও একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী নারায়ন বালা বাদী হয়ে নাজিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত জুতিকা বালা ও নারায়ন বালার দম্পতির চার ছেলে। দুই ছেলে ভারত থাকেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, মামলা দায়ের হওয়ার মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে হত্যার মূল রহস্য উন্মোচন করে নাজিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম হাওলাদার ও ডিবি পুলিশের ইনচার্জ রেজাউল করিম রাজিবের যৌথ অভিযানে মূল আসামি ছেলে জ্যোতিষ বালাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আসামি জ্যোতিষ বালা পুলিশের কাছে তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পুলিশকে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে মায়ের প্রতি তার ক্ষোভ ছিলো। এছাড়া নিজের পরিবারে স্ত্রী সন্তানদের নিয়েও তিনি বিরক্ত ছিলেন। এ জন্য তিনি তার মাকে দায়ী করে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
নাজিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম হাওলাদার জানান, এ ঘটনায় নিহতের ছেলের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।নিহতের ছোট ছেলে ক্ষিতিশ বালা জানান, উপজেলার কালিবাড়িতে তাদের একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেখানে তিনি ও তার বাবা কাজ করেন। প্রতিদিন দোকান থেকে রাত ১২টার দিকে বাড়িতে যান। বাড়ি ফিরে দেখেন তার মা রক্তমাখা অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার জিনাত তাসনিম বলেন, ওই নারীর নাক, মুখ ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপের চিহ্ন রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম সেন্টু জানান, তিনি খবর পেয়ে সাথে সাথেই সেখানে যান। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।