ঢাকারবিবার , ২৮ জুলাই ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কান্না আহাজারি থামছেনা জসিম উদিনের মা ও স্ত্রীর বাবাকে খুঁজছে ছোট্ট শিশু  সাইফ-জান্নাত

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ২৮, ২০২৪ ৬:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বরিশালের বানারীপাড়ার পূর্ব সলিয়াবাকপুর গ্রামের হাফেজ মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন(৩৫)। গত ৯ দিন পেড়িয়ে গেলেও তার পরিবারে এখনও বইছে শোকের মাতম। স্ট্রোকের রোগী বৃদ্ধা মা মেহেরুন্নেছা বেগম, বিধবা স্ত্রী সুমি  ও ৫ম শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে জান্নাতের চোখ দিয়ে অনবরত ঝড়ছে অশ্রু। তাদের বুকফাটা আর্তনাদ ও কান্না-বিলাপ কিছুতেই থামছেনা। আধো আধো বুলিতে দেড় বছর বয়সী শিশু পুত্র সাইফ সবার মাঝে বাবাকে খুঁজে ফিরছে। ১০ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাত নিহত বাবার ছবি বুকে জড়িয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে, ছুটি নিয়ে ঢাকা থেকে বাবা বাড়িতে আসলে তাদের দুই ভাই-বোনের জন্য বিভিন্ন খেলনা,খাবার ও পোশাক নিয়ে আসতেন। আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরতেন। সেই প্রিয় বাবা আর কোন দিন আসবেন না,আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরবেন না। কাকে বাবা বলে ডাকবো আমরা। এদিকে স্বামীকে হারিয়ে পাগল প্রায় সুমি বেগম । দু’চোখে তার অমানিশার ঘোর অন্ধকার। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন,স্বামীই ছিলেন তার একমাত্র অবলম্বন। নোয়াখালীতে বাবার বাড়ির অবস্থাও তার ভালো না। কিভাবে চলবে সন্তানের লেখাপড়াসহ তাদের সংসার । তিনি মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।  প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে কোটা আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংর্ঘষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান হাফেজ মাওলানা জসিম উদ্দিন। ওই দিন রাতেই বানারীপাড়ার পূর্ব সলিয়াবাকপুর গ্রামের বাড়িতে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়। পরের দিন ২০ জুলাই শুক্রবার সকাল ৯টায় বাড়ির পাশে তার এক সময়ের বিদ্যাপিঠ পূর্ব সলিয়াবাকপুর দারুল উলুম হোসাইনিয়া কওমী কেরাতিয়া মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান হাওলাদের ছেলে। গত প্রায় ১৫ বছর ধরে ঢাকায় থাকতেন হাফেজ মাওলানা জসিম উদ্দিন। উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে এমএসএ ওয়ার্কসপে চাকরি করতেন। ঘটনার দিন ৭ নম্বর সেক্টরে ফরহাদ অটো পার্টসের দোকানে যান মাইক্রোবাসের পার্টস কিনতে। সেখান থেকে নিজ ওয়ার্কসপে ফিরতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি । বৃদ্ধা অসুস্থ মাকে দেখভাল করতে স্ত্রী ও সন্তানদের গ্রামের বাড়িতে রেখে ছিলেন জসিম উদ্দিন। সেই মাসহ স্বজনদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশের যাত্রী হলেন তিনি।