ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩১ অক্টোবর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আজ ৩১ অক্টোবর : হ্যালোইন ডে

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
অক্টোবর ৩১, ২০২৪ ১২:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

বিশ্বব্যাপী ৩১ অক্টোবর পালিত হয় হ্যালোইন ডে। এটিকে ‘ভূত দিবস’ ও বলা হয়ে থাকে। হ্যালোইন শব্দটি এসেছে স্কটিশ ‘অল হ্যালোস’ ইভ থেকে। হ্যালোইন শব্দটির অর্থ হল ‘পবিত্র’। অল হ্যালোজ ডে ‘ফিস্ট অব অল সেন্টস ডে’ নামেও পরিচিত। হ্যালোইন খ্রিষ্টানদের অন্যতম প্রধান উৎসব হওয়া সত্ত্বেও বিগত কয়েক বছরে উৎসবটির জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে।

প্রায় দু’হাজার বছর আগে বাস করতেন সেল্টিক জাতির মানুষ। প্রকৃতপক্ষে, তারাই হ্যালোইন উৎসব পালন শুরু করেছিলেন। সেল্টিক জাতির সামহাইন উৎসব থেকেই মূলত হ্যালোইনের শুরু বলে মনে করা হয়। সেল্টিকদের বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে মৃতদের আত্মা জীবিত মানুষের আত্মার জন্য সমস্যা তৈরি করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়। এই অশুভ আত্মাদের তাড়ানোর জন্য জীবিতরা ভূতের মতো পোশাক পরেন। এছাড়া, বিদেহী আত্মাদের বিতাড়নের জন্য আগুন জ্বালিয়ে রাখা হয়। সেল্টিক জাতির এই ‘সাহ-উইন’ উৎসবই এখনকার দিনের ‘হ্যালোইন’ উৎসব।

হ্যালোইন উৎসবের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো কুমড়ো। অনেকেই কুমড়ো দিয়ে সাজিয়ে তোলেন নিজেদের বাড়িঘর। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কুমড়োই কেন হ্যালোইন উদযাপনের প্রধান উপকরণ?

অনেকের মতে, হ্যালোইন ও মিষ্টিকুমড়ার সঙ্গে আইরশিদের একটি সম্পর্ক আছে। সেখানে নাকি স্টিঞ্জি জ্যাক নামে এক মাতাল বাস করতো, যে কিনা একবার শয়তানকে মদ্যপানের দাওয়াত দিয়ে বসে।

তবে শয়তানকে মদ্যপানের আমন্ত্রণ জানানো তো চাট্টিখানি কথা নয়! জ্যাক ফন্দি আঁটে, কীভাবে তাকে ধোঁকা দেয়া যায়। কিন্তু যথারীতি শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর পর স্বর্গ ও নরক কোথাও জায়গা পায় না জ্যাক। জ্যাকের আত্মাকে একটি শালগমের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেরত পাঠানো হয় পৃথিবীতে। সেই শালগম আকারে সে যেকোনো অশুভকে প্রতিহত করে আসছে হাজার বছর ধরে, এমনটাই প্রচলিত রয়েছে। কালের বিবর্তনে শালগমের পরিবর্তে কুমড়াকে ব্যবহার করে বিভিন্ন নকশা করা হয়।

হ্যালোইন উদযাপনে মানুষ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভট পোশাক পরে থাকেন। উৎসবের দিনে রাক্ষস, শয়তান, ভুত, ভ্যাম্পায়ার, দানব, মমি, কঙ্কাল, ওয়ারউলফ ও ডাইনির মতো পোশাক পরে লোকে ঘুরে বেড়ায়।

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ভাগে আমেরিকায় জাতীয়ভাবে হ্যালোইন ডে পালিত হতে থাকে। ১৯২০ থেকে ১৯৫০ সালের ভেতর পুরো আমেরিকায় হ্যালোইন ডে’র আনুষ্ঠানিকতা বাড়তে থাকে। পরে দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। এদিন সবাই ভূতের সাজে নিজেকে সাজায়। অনেকের মতে, এসময় সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে যায় বিদেহী আত্মারাও।

এ দিনটিকে ঘিরে পুরো অক্টোবর মাসব্যাপী চলে আয়োজনের ঘনঘটা। কুমড়োর লণ্ঠন তৈরি, বাড়িঘর-রাজপথ সাজানো ও চকলেট-পেস্ট্রি তৈরিতে ব্যস্ত থাকে আয়োজকরা।

বর্তমানে আমেরিকায় হ্যালোইন ডে’র বাণিজ্যিক গুরুত্বও রয়েছে। দেশটি প্রতিবছর হ্যালোইন ডে উৎসবে খরচ করে প্রায় ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আমেরিকার শিশুরা ভুতের মতো সেজে ‘ট্রিক অর ট্রিট’ উদযাপন করে এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে বলে, ‘ট্রিক অর ট্রিট?’ প্রতিবেশীরা তাতে ভয় পাওয়ার ভান করেন ও তাদের বলেন– ‘ট্রিট’। এরপর বাচ্চা ভুতগুলোর হাতে চকলেট তুলে দেন তারা।