নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীর গ্রীন সিটি পার্কের বেহাল দশা শিশুদের খেলনা রাইড এখন মরদ ফাঁদ : গভীর রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা।
সঠিক রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে গ্রীন সিটি পার্কটি। উদ্বোধনের ৮ বছরের মাথায় পার্কটির প্রায় সকল খেলনা রাইডগুলো অনুপযোগী। এরফলে শিশুরা মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা অভিভাবকদের। শুধু খেলনা রাইডই নয়, পুরো পার্কটির অবস্থাই করুন। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এ অবস্থার তৈরী হয়েছে। দ্রুত সংষ্কার করা না হলে মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য নির্মিত পার্কটি শিশুদের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
বিসিসি সূত্রে জানাগেছে, ২০১৬ সালের ২৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় তৎকালীন সিটি মেয়র মরহুম আহসান হাবিব কামাল নগরীর বান্দরোডের বঙ্গবন্ধু উদ্যান সংলগ্ন এ পার্কের উদ্বোধন করেন। প্রায় এক একর জায়গার উপর নির্মিত এ প্রকল্পে ব্যায় হয়েছে এক কোটি ৪২ লাখ টাকা। পার্কটিতে শিশুদের খেলাধুলার জন্য বিভিন্ন ধরণের দোলনাসহ ১৪টি খেলনা রাইড, ৭৫ শিশুর আসন বিন্যাস, একটি খেলার মাঠ, ১৪টি বসার বেঞ্চ, ১০টি ছোট-বড় ফুলের বাগান, একটি টয়লেট, প্রায় ৪শ’ অভিভাবকের আসন ব্যবস্থা, একটি বিশ্রামাগার, শিশুদের জন্য দুটি খাবার ঘর রাখা হয়। ওই সময় পার্কটির আলোকসজ্জা বেশ আলোচিত হয়।
সীমানা প্রাচীরসহ পুরো পার্কে ৭০টি বৈদ্যুতিক বাতির সংযোজন করা হয়। তবে আলোকসজ্জায় সজ্জিত ছয়টি খুঁটি আরো আকর্ষনীয় করে তোলে পার্কের পরিবেশ। পার্কটির নির্মান কাছ করেছিলেন প্রায়ত মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল হাসান রুপম। উদ্বোধনের পর পরই শিশুদের সবচেয়ে পছন্দের স্থান হয়ে ওঠে এ পার্ক। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পার্কে ভীড় থাকতো শিশু ও অভিভাবকদের। আহসান হাবিব কামাল মেয়র থাকাকালীন বেশ ভালই রক্ষনাবেক্ষন হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে রুগ্ন দশায় পড়ে বিনোদন কেন্দ্রটি। একে একে অকেজো হয়ে পড়ে আলোকসজ্জার ছয়টি খুঁটি। নি¤œমানের কাজ করার কারণেই এ অবস্থা সৃষ্টি হয় বলে শুরু থেকেই অভিযোগ ছিলো। ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এরপর আর কোন সংষ্কার হয়নি। উল্টো তদারকি কমিয়ে দেয় সিটি কর্পোরেশন।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পার্কের মোট ১৪ টি খেলনা রাইডারের একটিও ভালো অবস্থায় নেই। লোহা দিয়ে বানানো দোলনা ও অন্যান্য খেলনা রাইডগুলো এমন অবস্থা হয়েছে যেকোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্লাইডার খেলনাগুলোর বিভিন্নস্থানে প্লাস্টিক ভেঙ্গে তৈরি হয়েছে বড় ছিদ্র যাতে পা আটকালে দুর্ঘটনায় পড়বে শিশুরা। বেঞ্চগুলো আছে তবে তাতে বসার অবস্থা নেই। ফুলের বাগান নেই। পার্কের মধ্যে পড়ে আছে বিশাল বিশাল গাছের গুড়ি। সীমানাপ্রাচীর সহ কোথাও জ্বলেনা বাতি। গভীর রাতে হয় স্থানীয় মাদকসেবীদের আড্ডা।
এমন অবস্থায় পার্কটি শিশুদের জন্য উপযোগি নয় বলে জানান পার্কে আসা অভিভাবক রুবেল। শিশুকন্যা নিয়ে আসা এই ব্যক্তি বলেন, ছুটির দিনে সন্তানদের নিয়ে আসেন এই পার্কে। পার্কটির অবস্থা অনেক আগ থেকেই খারাপ। এতে করে শিশুরা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। বিসিসি কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই পার্কটির এ রুগ্নদশা। পার্কটি অবহেলায় শেষ হয়ে গেছে। নগরবাসীর বিনোদনের জন্য সংশ্লিষ্টদের জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।
এ বিষয়ে জানার জন্য সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।