
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল ইনষ্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আই.এইচ.টি) শিক্ষার্থীদের উপর শুভরাজ ৯ লঞ্চের স্টাফদের হামলার প্রতিবাদে লঞ্চটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। এতে করে ঢাকাগামী যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ- এমনিতেই প্রতিদিন দুই টি লঞ্চ চলাচল করে, এর মধ্যে একটি অবরুদ্ধ থাকলে আগাম বুকিং দেয়া যাত্রীসহ সাধারন যাত্রীরা বিপাকে রয়েছেন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫ টার দিকে বরিশাল নদী বন্দর লঞ্চঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়- গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকায় পরীক্ষা দিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে শুভরাজ ৯ লঞ্চে ওঠেন বরিশাল ইনষ্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আই.এইচ.টি) শিক্ষার্থী আকাশ, রনি, সাজ্জাদ, রবিন, সিয়াম, পূজা, হাফসা ও লিমা। এ সময় তারা লঞ্চের একটি স্টাফ কেবিন সাড়ে ৪ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। তখন তাদের ৪ টি টিকিট দেয়ার কথা থাকলেও প্রথমে রাতে রনির কাছে ৪টি টিকিট দেন এক স্টাফ। এরপর সকালে সাজ্জাদের কাছে আরও ৪ টি টিকিট দিয়ে যান আরেক স্টাফ। তবে আলাদা আলাদাভাবে টিকিটি দেয়ায় দুই বার টিকিট বিষয়টি তাদের জানা ছিল না বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। পরে লঞ্চ থেকে নেমে তারা পরীক্ষা হলে যাওয়া আগ মূহুর্তে লঞ্চের এক স্টাফ তাদের কল করে দু’বার টিকিট দেয়ার বিষয়টি জানালে তারা নিশ্চিত হন, তাদের দু’ বারে ৮টি টিকিট দেয়া হয়েছে। এ সময় তাদেরকে ফোনেই ব্যঙ্গাত্মকমূলক নানা কথা-বার্তা বলা হয়।
পরবর্তীতে তারা পরীক্ষা শেষ করে মানামী লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চ ছাড়ার আগ মুহুর্তে শুভরাজ ৯ লঞ্চের স্টাফ রমজান ও শাহ আলমের নেতৃত্বে ৮/১০ মিলে তাদেরকে বেধম মারধর শুরু করে। এ সময় তারা দু’ বার টিকিট নেয়া বিষয়টি ভূল বোঝাবুঝি হয়েছে জানালেও তারা শিক্ষার্থীদের কথায় কর্নপাত করেন নি। উপরন্ত তাদের কাছ থেকে নগদ ১২ হাজার টাকা ও একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। বুধবার সকালে শুভরাজ ৯ লঞ্চটি বরিশাল নদী বন্দর লঞ্চঘাটে আসলে দুপুর ১২ টার দিকে লঞ্চঘাটে আসেন শিক্ষার্থীরা। এরপর দফায় দফায় মিছিল নিয়ে লঞ্চঘাটে এসে বিকেল ৫ টার দিকে লঞ্চটি অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এদিকে ঢাকাগামী যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ- এমনিতেই প্রতিদিন দুই টি লঞ্চ চলাচল করে, এর মধ্যে একটি অবরুদ্ধ থাকলে আগাম বুকিং দেয়া যাত্রীসহ সাধারন যাত্রীরা বিপাকে রয়েছেন। অনেকেই বিকল্প পথ হিসেবে বাসষ্ট্যান্ডে ছুটছেন।
আহত শিক্ষার্থী পূজা বলেন- লঞ্চের স্টাফরা ভূল করে আমাদের আলাদা আলাদাভাবে ৮ টি টিকিট দিয়েছিল, যেটা আমাদের জানা ছিল না। পরে তারা কল করে জানালে আমরা বিষয়টি বুঝতে পারি। এরপরে তারা আমাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এমনকি অন্য লঞ্চে বরিশালে আসার পথে আমাদের মারধর শুরু করে। এ সময় আমি বাধা দিলে আমাকেও মারধর করে এবং শ্লীলতাহানী করে। এক পর্যায়ে আমাদের কাছ থেকে নগদ ১২ হাজার টাকা ও একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যান। আমি এর বিচার চাই। নাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
শিক্ষার্থী রনি বলেন- আমরা ঢাকায় পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। তুচ্ছ ঘটনায় আমাদের মারধর করা হয়েছে। আমাদের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
শুভরাজ ৯ লঞ্চের ম্যানেজার সজল বলেন- বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি ওই স্টাফকে কল করেছি, কিন্তু সে কলে সারা দেয়নি। তাই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। আমি ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন- ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।