
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: গাজায় গণহত্যা বন্ধে ‘সোমবার’ বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধের ডাক
ইসরায়েলের নৃশংস আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ফিলিস্তিন। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চলছে অব্যাহত বোমা হামলা, নারী ও শিশুসহ বেসামরিক মানুষের গণহত্যা এবং মানবিক সহায়তার পূর্ণ অবরোধ।
এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সোমবার (৭ এপ্রিল) সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ফিলিস্তিনি জনগণ ও নেতৃত্ব।
ফিলিস্তিনের জাতীয় ও ইসলামিক শক্তিগুলোর সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন দ্য ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস অব ফিলিস্তিন এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে, এই ধর্মঘট হবে শুধু ফিলিস্তিনে নয়, বরং বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে, যেখানে মানুষ ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারে বিশ্বাস রাখে।
বিশ্বের সব দেশকে একযোগে এই ধর্মঘটে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, সোমবার যেন বন্ধ থাকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কারণ, গাজায় রক্ত ঝরছে, আর নীরবতা মানেই সেই অন্যায়ের প্রতি সমর্থন।
শুক্রবার (৬ এপ্রিল) ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তার বিরুদ্ধে বিশ্বকে জেগে উঠতে হবে। এই আগ্রাসনের লক্ষ্য শুধু মানুষের প্রাণহানি নয়, বরং একটি জাতিকে তার নিজ ভূমি থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার পরিকল্পনা।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই ধর্মঘট কেবল প্রতিবাদ নয়, এটি প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর। এটি বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেবে যে, ফিলিস্তিনিরা একা নয়। গাজায় মানবতা আজ হুমকির মুখে, এখনই সময় একসঙ্গে দাঁড়ানোর।
ফিলিস্তিনের নেতারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের জন্য জরুরি জবাবদিহির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় ও বৈশ্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
ধর্মঘট সফল করতে ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনের নানা শহর ও শরণার্থী ক্যাম্পে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ধর্মঘটে অংশ নেবেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গত ১২ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন।
আবাসিক ভবন ও অস্থায়ী আশ্রয়শিবির লক্ষ্য করে চালানো এসব হামলায় অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।