ঢাকাশনিবার , ২৪ মে ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দেশে জুতা বিক্রি হয় এসি রুমে, বই ফুটপাতে : শিক্ষকরা থাকেন গাছ তলায় আর দু*র্নীতি*বা*জরা ৫ তলায়

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
মে ২৪, ২০২৫ ২:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

মো: আম্মার হোসেন আম্মান :: দেশে জুতা বিক্রি হয় এসি রুমে, বই ফুটপাতে : শিক্ষকরা থাকেন গাছ তলায় আর দু*র্নীতি*বা*জরা ৫ তলায়

এই দেশ যেন উল্টো একটা সমাজচিত্রের আয়না। এখানে পায়ে দেওয়া জুতা বিক্রি হয় দামী এসি রুমে, আর মাথার খোরাক বই পড়ে থাকে রোদ-বৃষ্টি আর ধুলোর ভেতরে ফুটপাতে।
যে শিক্ষকের হাতে গড়ে ওঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, যিনি জীবনভর জ্ঞান বিলিয়ে যান, তাঁর নিজের ভবিষ্যৎ পড়ে থাকে অনিশ্চয়তার অন্ধকারে।

তিনি হয়তো এখনো শিক্ষাদানের চেষ্টা করেন গাছের নিচে দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা পুরনো বই আর একরাশ অপ্রাপ্তির হাহাকার।

একজন শিক্ষক সারা জীবন কষ্ট করে কী পায়?
একজন শিক্ষক তার পুরো জীবনটা ব্যয় করেন ছাত্র গড়ার কাজে, কিন্তু নিজের জীবনটা গড়ে উঠতে পারে না কখনোই।
একজন পিন্টু, যিনি সারাজীবন শিক্ষকতা করেছেন, আজ পেনশনের টাকায় চলেন। তিনি বলেন, “জীবনে বড় কিছু চাইনি, শুধু চাইছিলাম সম্মান আর স্থিরতা। কিন্তু শিক্ষক হয়ে সেটা পাওয়া গেল না।” পাশের ভবনের পাঁচতলায় থাকেন বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তারা , যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বহু। কিন্তু সমাজ তাদেরকেই ‘সফল’ বলে চিনে।

 

যেখানে বই বিক্রি হয় ফুটপাতে, সেখানে বিবেকও থাকে হাঁটুর নিচে, ফুটপাতের ধারে বই বিক্রি করেন আব্দুল খালেক। তাঁর চোখে হতাশা—“কেউ আর বই চায় না ভাই। চায় মোবাইল, ব্র্যান্ড, স্ট্যাটাস। জ্ঞান এখানে বেচার ঘাটে।”
এতদিন যারা শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে গেছেন, আজ তাঁরা একা, অবহেলিত। যেন শিক্ষকদের কথা কেউ ভাবেও না, বুঝতেও চায় না।

এটা শুধু অবমূল্যায়ন নয়—এ এক জাতিগত আত্মঘাত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজ যখন গুণীকে গাছতলায় রেখে দুর্নীতিবাজকে তলায় উঠায়, তখন সেটা কেবল অবিচার নয়, বরং একটি জাতির মূল্যবোধের দেউলিয়াত্ব।
“শিক্ষকের কষ্টের মূল্য নেই, কারণ সমাজ সফলতার মানদণ্ড বদলে ফেলেছে,” —বললেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফারহানা কবির।

আজ সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার—এই সমাজে কারা আসলে সম্মানিত? যিনি গড়েন, না যিনি ভেঙে খান?
যতদিন পর্যন্ত বই থাকবে ফুটপাতে, গুণীজন থাকবে গাছতলায় আর দুর্নীতিবাজ থাকবে পাঁচতলায়—ততদিন এই সমাজের চোখেও থাকবে ঘোর অন্ধকার।