
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে ছাত্র আন্দোলনে বিতর্কিত এএসআই মিজান এখনও কোতোয়ালি থানায় বহাল!
গত জুলাই-আগষ্টের ছাত্র আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য দেশের বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে বরিশালের আন্দোলনের সময় আলোচনায় আসা এএসআই মিজানুর রহমান এখনও বহাল রয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানায়—যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক সমাজ ও সচেতন মহল।
সূত্র মতে, ছাত্র আন্দোলনের সময় বরিশাল নগরীতে শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়নের ঘটনায় সরাসরি অংশ নিতে দেখা গেছে এএসআই মিজানকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে আসে, আন্দোলনকারীদের উপর হামলার মতো কর্মকাণ্ডে এএসআই মিজানের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল। এরপরও তার বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়ায় ক্ষোভ জানাচ্ছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, মিজানুর রহমান দীর্ঘদিন ধরেই বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ থানা—কাউনিয়া ও কোতোয়ালিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ছাত্র আন্দোলনের পর তাকে পিবিআইতে বদলি করা হলেও এর কিছুদিন পর তিনি অদৃশ্য ক্ষমতাবলে ফিরে আসেন কোতোয়ালি থানায়। ফলে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে—তিনি কার ‘ছত্রচ্ছায়ায়’ এতদিন থেকে যাচ্ছেন বরিশাল মেট্রোতে?
জানা যায়, কোতোয়ালি ও কাউনিয়া থানা এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ নাগরিকদের হেনস্তা, অর্থ বাণিজ্য, মামলা-ঝুলিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে মিজানের বিরুদ্ধে। কিন্তু ভয়ভীতি ও প্রভাবের কারণে অনেকেই প্রকাশ্যে কিছু বলতে সাহস পান না।
অভিযোগ রয়েছে, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কাউনিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন এএসআই মিজান। তখন মহানগর শ্রমিকলীগের আহবায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না সহ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে মিজানের। তাদের হয়ে বিভিন্ন সময় বিএনপির নেতাকর্মী ও বিভিন্ন সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার ও নানাভাবে হয়রানি করারও অভিযোগ রয়েছে এই মিজানের বিরুদ্ধে।
এমনকি থানায় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের সাথে অশোভনীয় আচরণ করার অভিযোগও রয়েছে মিজানুরের বিরুদ্ধে।
সচেতন মহলের মতে, এই ধরনের পুলিশ সদস্যরা পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন—এএসআই মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে পুলিশের জনআস্থা আরও ক্ষুণ্ন হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “একটা থানায় বছরের পর বছর থাকা মানেই সেটা দুর্নীতির গন্ধ। যদি সত্যিই কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত হয়, তাহলে শুধু আন্দোলনের সময় নয়—তার আগের অপকর্মগুলোও বেরিয়ে আসবে।”
অপরদিকে এএসআই মিজানের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কাছে আবেদন জানিয়েছেন সচেতন মহল।