ঢাকামঙ্গলবার , ২৭ মে ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সিডিউল বিক্রির আগেই হাট দ*খ*লে বিএনপি নে তারা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
মে ২৭, ২০২৫ ১১:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

 নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিডিউল  বিক্রির আগেই হাট দখলে বিএনপি নেতারা।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ১৫টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। অস্থায়ী এসব হাটের সিডিউল এখনও বিক্রি শুরু হয়নি, কিন্তু তার আগেই অধিকাংশ হাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। তারা হাটগুলোতে খুঁটি বসানো থেকে শুরু করে ত্রিপল টানিয়ে হাসিল আদায়ের কাউন্টার পর্যন্ত প্রস্তুত করে ফেলেছেন। এমনকি হাটের ইজারাদার বা পরিচালকের স্থলে নিজেদের নাম ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা দেখে ইজারাপ্রত্যাশী ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

এই কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী ইতোমধ্যে দুই বিএনপি নেতাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছেন।

জানা যায়, সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এবার অস্থায়ী ১৫টি পশুর হাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। জেলা প্রশাসকের অনুমোদন সাপেক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এ হাটগুলোর দরপত্র বিক্রি শুরু হওয়ার কথা। দিনব্যাপী দরপত্র বিক্রির পর শুক্রবার জমা ও খোলা হবে। এরপর সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাটের বৈধ ইজারাদার ঘোষণা করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। যেখানে দরপত্র বিক্রি শুরু হয়নি, সেখানে ফতুল্লার কিছু বিএনপি নেতা সিন্ডিকেট করে পশুর হাটের ইজারাদার হিসেবে নিজেদের নাম দিয়ে পোস্টার করে এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে সাইনবোর্ডে পশুর হাটের ইজারাদার হিসেবে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা এবং কাশীপুর হাটখোলা পশুর হাটের পরিচালক হিসেবে কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মঈনুল হোসেন রতন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ মন্ডলের নামে পোস্টার করা হয়েছে।

বিএনপি নেতাদের এই কর্মকাণ্ডে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন হাট ইজারা নিতে ইচ্ছুক অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। তারা এখন দরপত্র কিনতেই ভয় পাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভূইগড় এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে যেভাবে সিন্ডিকেট করে আওয়ামী লীগ নেতারা কম মূল্যে হাটের ইজারা নিয়েছিল, এবারও একইভাবে বিএনপি নেতারা সিন্ডিকেট করছেন। এর ফলে অন্য কেউ দরপত্র কিনতেও পারবে না এবং সরকার প্রচুর রাজস্ব হারাবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, এলাকা ভিত্তিক বিএনপি নেতারা কোরবানির হাটের ইজারা সিন্ডিকেট করে নিচ্ছেন। তারা জানান, ‘ইজারা নিলেও পরে চাপ দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়। তাই কেউ সিডিউল নিতে আসছে না।’

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দুটি হাটের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। এরই মধ্যে কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মঈনুল হোসেন রতনকে ফোন করে পোস্টারিং করার বিষয়ে জানতে চেয়েছি। তার দাবি, পোস্টারিং গরুর ব্যাপারীরা করেছে। তবে আমরা সতর্ক করে দিয়েছি, পোস্টার না সরালে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। সে আমাদের মৌখিক মুচলেকা দিয়েছে এবং পোস্টার সরিয়ে ফেলার বিষয়ে জানিয়েছে।’

স্থানীয়রা বলছেন, কোরবানির হাটকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই রাজনৈতিক দখলদারিত্ব বাড়ে। বিএনপি নেতাদের এই কর্মকাণ্ডে হাটের স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতামূলক সিডিউল ক্রয় ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসন কঠোর হলে কি এবার পরিবর্তন আসবে, নাকি আগের মতোই চলবে দখলের খেলা?