
নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঈদুল আজহা উপলক্ষে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। রোটেশন প্রথা ভেঙে এবার এই রুটে ১০ থেকে ১২টি লঞ্চ সার্ভিসে আসতে পারে। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম দিনে যাত্রীর ওপর নির্ভর করে এই সংখ্যা চার থেকে ছয়টি হতে পারে। নৌযান কর্তৃপক্ষের আশা, যাত্রী উপস্থিতি বাড়বে ঈদের বিশেষ সার্ভিসে। তবে ঝড়-ঝঞ্ঝার মৌসুমের কারণে শঙ্কাও রয়েছে ঢাকা বরিশাল রুটের নৌযাত্রায়।
পদ্মা সেতু চালুর পর বরিশাল-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ সার্ভিসে ধস নামে। যাত্রীসংখ্যা একেবারেই কমে যায়। যে কারণে লঞ্চমালিকেরা রোটেশনে মাত্র দুই থেকে তিনটি লঞ্চ চালিয়ে আসছে। তবে ঈদ উৎসবে যাত্রীর ভিড় আগের মতো ফিরে আসে। এবারও লঞ্চ সার্ভিসে কোরবানির ঈদে যাত্রী হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
আজ সোমবার বরিশাল নগরের বিভিন্ন লঞ্চের বুকিং কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে বরিশালে আসা টিকিটের সংকট। অনেকে আগেভাগে টিকিট নিচ্ছেন। কিন্তু আগের মতো ভয়াবহ সংকটের পর্যায়ে পৌঁছায়নি বলে সুন্দরবন লঞ্চের কাউন্টার ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান। সেখানে কথা হয় যাত্রী মিলন তালুকদারের সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁর ভাইয়ের পরিবার আসছে। টিকিট আগেই বুকিং করে রেখেছিলেন।
সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মো. আলম ও কুয়াকাটা লঞ্চের মাস্টার মো. মানিক বলেন, দীর্ঘদিন লঞ্চে যাত্রী সংকট। তাঁরা কেবল ঈদ উৎসবের দিকে তাকিয়ে থাকেন। রোটেশন প্রথা ভেঙে দেওয়ায় আশা করছেন ঈদুল আজহায় সাধারণ মানুষের ভিড় বাড়বে। এখন ঝড়ের মৌসুম হওয়ায় শঙ্কার কথাও জানালেন তাঁরা।
জানতে চাইলে অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ঈদের আগের রোটেশন প্রথায় দুটি লঞ্চ চলাচল করত। তবে ঈদ উপলক্ষে রোটেশন তুলে দিয়ে লঞ্চের সংখ্যা বাড়াচ্ছেন তাঁরা। গতকাল রোববার লঞ্চ মালিক সমিতির সভায় ৩ জুন থেকে বিশেষ সার্ভিস শুরু করা হচ্ছে। ঈদে ভাড়া বাড়বে না। সরকারি রেট অনুযায়ী সিঙ্গেল ১০০০, ডাবল ২০০০ ও ডেক ৪০০ টাকা নেওয়া হবে। এ ছাড়া লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঈদের তিন দিন আগে এবং তিন দিন পরে মালবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। গত ২২ মে মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান পাটোয়ারী।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদে যাত্রীসেবা নিশ্চিতে তাঁরা প্রস্তুতি নিয়েছেন। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সমন্বয় সভায় ঈদে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় আনসারের পাশাপাশি ক্যাডেট সদস্যরা ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করবেন। তিনি বলেন, এখন ঝড়-ঝঞ্ঝার মৌসুম। এ জন্য নৌনিরাপত্তা দিবসে লঞ্চ চালকদের সতর্ক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল নৌযাত্রী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ নিলু বলেন, ঈদ উৎসবে যাত্রীদের যাতে স্বস্তির যাত্রা হয়, সেদিকে প্রশাসন ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে, ঝড়-ঝঞ্ঝার এ মৌসুমে সতর্কভাবে লঞ্চ চলাচল করতে হবে। তাঁরা এ বিষয়গুলো সংগঠনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করবেন।