
নিউজ ডেস্ক :: অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
সোমবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় নেপালের সঙ্গে ৩ অক্টোবর ২০২৪ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সাশ্রয়ী মূল্যে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করা হবে।
বিদ্যুৎ খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ বাতিল করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এ আইনের আওতায় ইতোমধ্যে সম্পাদিত চুক্তিসমূহ পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের নিমিত্ত একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে চুক্তিগুলোর ট্যারিফ কাঠামো পর্যালোচনা এবং পুনরায় নেগোসিয়েশন ও সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে পৃথক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে মেট্রোপলিটন এলাকায় বিতরণ লাইন এবং সাবস্টেশনসমূহ ভূ-গর্ভস্থ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাকে আরও স্থিতিশীল এবং কার্যকরী করবে।
ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় অনেক দল, চাপ বাড়ছে সরকারের ওপর
অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য দিনক্ষণ এখনো স্পষ্ট করেনি। তবে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের যেকোনো সময়ে নির্বাচন করা হবে বলে বার বার জানিয়েছে। যদিও এই সিদ্ধান্তে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারছে না অনেক রাজনৈতিক দল। যে কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে তারা। যা নির্বাচন আয়োজনে চাপ বাড়াচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর।
জাতীয় ঐকমত্য পরিষদের বৈঠকে সোমবার বিএনপিসহ অনেকগুলি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চেয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তারা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে, নির্বাচন ডিসেম্বরের পর যাওয়ার কোনো কারণ নেই।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস বিভাগ যে ভিডিও প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ১২ দলের জোট, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ জাসদ, ভাসানি অনুসারী পরিষদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, এবং আম জনতা দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়।
জামায়াতে ইসলামী যে কোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, প্রথম হচ্ছে সংস্কারের বিষয়। তারা বলেছেন, জুলাইয়ের ভেতরে এ সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। অনেক বিষয় ঐকমত্য হয়েছে। কিছু বিষয়ে সামান্য দ্বিমত আছে বিভিন্ন দলের মধ্যে।
তবে জুলাই সনদ ঘোষণার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিপক্ষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৬ বছর আমরা অপেক্ষা করেছি, এরপর ১০ মাস অপেক্ষা করেছি, আরও দুই মাস অপেক্ষা করতে চাই এবং সরকারকে সময় দিতে চাই সব রাজনৈতিক দল মিলে। দুই মাসের মধ্যে আমাদের জুলাই সনদ, যেখানে জনগণ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ শাসনের রূপরেখা, শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা দেখতে পারবে। সেই জুলাই সনদ হওয়ার পরে সরকার যাতে নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করে, সে আহ্বান আমরা জানিয়েছি। জুলাই সনদ হওয়ার পরে আমরা আমাদের দলীয় মন্তব্য জানাব যে, আমরা কখন নির্বাচন চাইছি।’