ঢাকামঙ্গলবার , ৩ জুন ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বৈ*রা*চা*র সরকার থেকে ব*র্ত*মান ব*হা*ল তবিয়তে ডিএডি শামস আরমান!তিনি নিজেই যেন মহা পরি*চা*ল*ক

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুন ৩, ২০২৫ ৩:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের একটি নাম বারবার উঠে আসে—ডিএডি শামস আরমান। স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকে শুরু করে বর্তমান সময়েও যিনি একইভাবে অধিপত্য বজায় রেখেছেন। বিগত “ফেসবুক সরকারের” আমলে যেমন অতি-আস্থাভাজন ছিলেন তৎকালীন মহাপরিচালকের, ঠিক তেমনিভাবে বর্তমান ডিজিরও অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

শামস আরমানের আচরণ দেখে অনেকেই কটাক্ষ করে বলেন, “তিনি নিজেই যেন মহাপরিচালক!” বাস্তবেও তার স্বেচ্ছাচারিতার ধরন অনেকটা সেরকমই। অধিদপ্তরের নিয়মনীতি, প্রশাসনিক কার্যক্রম এমনকি বদলির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে তার হস্তক্ষেপ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

বদলি বাণিজ্য ও প্রশাসনিক দখলদারিত্ব : ফায়ার সার্ভিসে নিয়ম অনুযায়ী একই স্টেশনে তিন বছরের বেশি সময় কেউ কর্মরত থাকতে পারে না। এই নীতির আড়ালে তৈরি হয়েছে বদলি বাণিজ্যের সুবর্ণ ক্ষেত্র। অভিযোগ আছে, শামস আরমান বদলি সংক্রান্ত কাজে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। প্রকৃতপক্ষে বদলি প্রশাসন শাখার অধীনে হলেও তিনি ডিজির পিএস পরিচয়ে নিজের লোক দিয়ে কমিটি গঠন করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

অপারেশনের কাজ বাদ দিয়ে ডিএডিদের অফিসে বসানো : ফায়ার সার্ভিসের মূল কাজ হলো আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কার্যক্রম—অর্থাৎ অপারেশন। কিন্তু শামস আরমানের নেতৃত্বে বহু দক্ষ ডিএডিকে মাঠের কাজ থেকে তুলে এনে দপ্তরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এতে অপারেশনাল দক্ষতা যেমন কমেছে, তেমনি মাঠ পর্যায়ে অফিসারদের মধ্যে হতাশা ও বিভক্তি তৈরি হয়েছে।

এডি ও ডিএডিদের পরিদর্শন চালু: নতুন গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি : ফায়ার সেফটি প্ল্যান এবং কার্যকরী সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে নতুনভাবে এডি ও ডিএডিদের পরিদর্শন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পূর্বে যা ছিল না। ফলে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবমূল্যায়ন করে সুবিধাভোগীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

রিপোর্ট ও তদন্তে হস্তক্ষেপ : ফায়ার দুর্ঘটনার রিপোর্ট কিংবা তদন্তে শামস আরমানের হস্তক্ষেপ বহু পুরনো অভিযোগ। নিজের পছন্দের লোক দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রভাবিত রিপোর্ট তৈরি করা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

প্যাকেজ ও ট্রেনিংয়ে অংশ না নিয়ে অর্থ উত্তোলন : আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হলো—শামস আরমান বিভিন্ন প্যাকেজ ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করেও ভুয়া বিল তৈরি করে অর্থ উত্তোলন করেছেন।

বই প্রকাশ ও অডিট আপত্তি : মিরপুর ট্রেনিং কমপ্লেক্সে অবস্থানকালে ডিপার্টমেন্টের কিছু প্রকাশনার পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিল করেন শামস আরমান। সরকারি অডিট টিম এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বিলের অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

অব্যাহত দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন: এই প্রেক্ষাপটে ফায়ার সার্ভিসের অভ্যন্তরে ও বাইরে নানা প্রশ্ন উঠছে একজন কর্মকর্তা কীভাবে এতদিন যাবৎ অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রভাব খাটিয়ে বহাল তবিয়তে থাকেন? সরকারি দপ্তরের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় যেখানে জবাবদিহিতার দাবি উঠে, সেখানে শামস আরমানের এই অবস্থান কি প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়?

শামস আরমানকে নিয়ে জুলাই আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট মহল প্রশ্ন তুলছে: এমন একজন স্বৈরতান্ত্রিক কর্মকর্তাকে কবে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে?

শামস আরমানের অপকর্মে সমূহ।

১!একই স্টেশনে  তিন বছরের অধিক সময়কাল চাকরির কারণে ফায়ার ফাইটার,,ড্রাইভার ও অফিসারদের বদলি বাধ্যতামূলক। এর কারণে প্রচুর বদলীর সুযোগ তৈরি হয় এবং বদলি বাণিজ্যের জন্য সুবিধা হয়েছে।

২!ফায়ার সেফটি প্লান ও কার্যকরী সনদের পরিদর্শনের জন্য অধিদপ্তরে নিয়োজিত এডি ও ডিএডি দের পরিদর্শন প্রথা চালু করা (যা আগে ছিল না)। এর ফলে অপারেশন কাজে নিয়োজিত মাঠ পর্যায়ের অফিসারদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে,ফলে একটা গ্রুপিং তৈরি হয়েছে।

৩!ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নের চিন্তা না করে, বদলীর ভয় দেখিয়ে অফিসার ও অন্যান্য ষ্টাফদের চাপে রাখা হয়েছে।

৪। ফায়ার সার্ভিসের মূল কাজ অপারেশন কর্মকাণ্ড। সে কাজ বাদ দিয়ে ডিএডিদের বিভিন্ন দপ্তরে সংযুক্ত রাখা হয়েছে।

৫। ডিএডি শামস আরমান বিভিন্ন ফায়ার রিপোর্টে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন।

কমিশনের কন্ডিশনে নিজের পছন্দের লোক দিয়ে কমিটি তৈরি করেন।

৬। মোটা অংকের টাকার বিনিময়  ফায়ারফাইটার এবং অফিসার বদলিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা এবং পছন্দের লোকদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো।

৭। প্যাকেজ এবং ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ না করেও টাকা উত্তোলন করেন।

৮। বদলী সংক্রান্ত কাজ হলো প্রশাসন শাখার কিন্তু সেটা উপেক্ষা করে পিএস শামস আরমান ডিজিকে দিয়ে (তার লোক দিয়ে) কমিটি করে বদলীবানিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

৯!৷ ডিএডি শামস আরমান মিরপুর ট্রেনিং কমপ্লেক্সে থাকাকালীন অবস্থায় ডিপার্টমেন্টের কিছু বই বান্ডিং করা হয়। প্রতিটা বইয়ের জন্য শামস আরমান বিপুল পরিমাণ অর্থ বিল করে হাতিয়ে নেন। বিষয়টি সরকারি অ্যাকাউন্ট সেকশনের অডিট টিম আপত্তি জানাই এবং বিল করা টাকা গুলো ব্যাক করতে বলেন।