ঢাকামঙ্গলবার , ১৭ জুন ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃ*দরোগ বিভাগে অব্য*ব*স্থা*পনার ক*রু*ণ চিত্র

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুন ১৭, ২০২৫ ১:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দেশের অন্যতম বৃহৎ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে চলছে চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলা। চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা যেন এক অনিশ্চয়তা, দুর্ভোগ ও অমানবিকতার ফাঁদে পড়ে যাচ্ছেন প্রতিদিন।

অকার্যকর যন্ত্রপাতি, অপরিষ্কার পরিবেশ, চিকিৎসকদের উদাসীনতা এবং সেবার অভাবে রোগীরা যেমন শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছেন, তেমনি মানসিকভাবেও আক্রান্ত হচ্ছেন।

চিকিৎসার পরিবেশ, নাকি নির্যাতনের মঞ্চ?

হৃদরোগ বিভাগে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে চরম অব্যবস্থাপনার করুণ চিত্র। কোথাও পানি জমে থাকা ভেজা মেঝে, কোথাও ছেঁড়া বা নোংরা বেডশিট। রোগীদের স্বজনরা বলছেন, গরমে হাঁসফাঁস করা রুগ্ন রোগীদের যেন মৃত্যুর দিকেই ঠেলে দিচ্ছে এই পরিবেশ।

যন্ত্র আছে, কিন্তু চালু নেই!

হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইসিজি মেশিন, মনিটরিং ডিভাইস, অক্সিজেন সাপ্লাই—প্রায় সবই অচল অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এইসব যন্ত্রের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা দূরের কথা, অনেক সময় রোগীকে রেফার করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

চিকিৎসক ও নার্সদের নিরুত্তরতা, প্রশাসনের উদাসীনতা

বিভাগে দায়িত্বরত অনেক চিকিৎসক ও নার্স নিজেদের মতো করে দায়িত্ব পালন করলেও, সামগ্রিকভাবে একটা অনীহা এবং দায়িত্বহীনতার চিত্রই স্পষ্ট। অভিযোগ জানালেও কর্তৃপক্ষ তাতে কান দেয় না বলে জানিয়েছেন একাধিক রোগীর স্বজন।

হৃদরোগীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে

হৃদরোগীদের দরকার সুশৃঙ্খল, পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক পরিবেশ—যেখানে তারা নিরাপদে চিকিৎসা নিতে পারবেন। কিন্তু এখানে যা চলছে, তা কার্যত মানবাধিকার লঙ্ঘনেরই সামিল। ন্যূনতম সহানুভূতি, সময়মতো ওষুধ কিংবা চিকিৎসকের উপস্থিতি—সবই যেন বিলাসিতা হয়ে উঠেছে।

প্রতিকারের দাবি

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে যা জরুরি:

অকেজো যন্ত্রপাতির দ্রুত সংস্কার ও সচলতা

ফ্যান ও এসির যথাযথ ব্যবস্থা

পরিপূর্ণ পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুমুক্ত পরিবেশ

আন্তরিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কার্যকর নজরদারি

হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির জবাবদিহিতা ও সাপ্তাহিক পর্যালোচনা

শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ যেন এখন এক নীরব কান্নার নাম। এখানে প্রতিদিন রোগী নয়, নির্যাতিত মানুষজন আশ্রয় নেয়। এখনই যদি প্রশাসন সক্রিয় না হয়, তাহলে এই অব্যবস্থা আরও বহু প্রাণের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।