![](https://ajkercrimetimes.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
নিজস্ব প্রতিবেদক :: উজিরপুরে কোটি টাকা ব্যয়ে কালভার্ট নির্মাণ : উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো দিয়ে।
বরিশালের উজিরপুরে কোটি টাকার কালভার্টে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো দিয়ে। ভোগান্তিতে স্থানীয়রা। দুই বছরেও করা হয়নি সংযোগ সড়ক। অকেজো হয়ে পড়ে আছে নির্মাণাধীন কালর্ভাটটি। উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের উত্তর বড়াকোঠা গ্রামের ধামুরা টু ডাবেরকুল খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে ওই কালর্ভাটটি।
অপরিকল্পিতভাবে কালর্ভাট নির্মাণ করায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। প্রায় ২ বছর আগে কালভার্টটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা স্থানীয়দের। এতে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যেমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, তেমনি কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রী পরিবহণ করতে না পেরে ৩-৪ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে বাড়তি টাকা ও সময় ব্যয়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এলাকাবাসী।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে পল্লী উন্নয়ন অবকাঠামো প্রকল্পের অধীনে ৮ শত মিটার রাস্তা ও একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৪শত ৮৭ টাকা ব্যয়ে কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মৌ এন্টারপ্রাইজ। এক বছরের ভিতরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, দুই বছরেও শুধু কালর্ভাট ছাড়া সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে পারেনি।
সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় কালভার্ট জনস্বার্থে কাজে আসছে না। গত শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা মৃত্য হাকিম ডাক্তারের বাড়ির সামনে ২৫/৩০ ফুট প্রস্থ খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে ৪ ফুট প্রস্থ একটি কালভার্ট, নেই কোনো সংযোগ সড়ক। পার হতে পারে না কোনো যানবাহন। বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল করছেন এলাকাবাসী। এটি উপকারের পরিবর্তে উল্টো দুর্ভোগ বাড়িয়েছে এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ১ হাজার লোক এই সড়কটি দিয়ে যাতায়ত করেন এবং উওর বড়াকোঠা গ্রামের লোকজনের ধামুরা বাজার ও উপজেলায় সদরের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সময়ে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম এই সড়কটি। এটি এমনেই কার্পেটিং সড়কের কথা থাকলেও এর মধ্যে কালভার্টের এই বেহাল অবস্থার কারণে এলাকার মানুষের মাঝে কাটা গায়ে লবণের ছিটার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে! কোনো জরুরি কাজ থাকলে দ্রুত যেতে পারেন না শুধু রাস্তার অভাবে।
উওর বড়াকোঠা গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী আজিজ সরদার (৫৫) বলেন, ‘সংযোগ সড়ক না থাকায় কালভার্টটি চলাচলের ক্ষেত্রে কোনো কাজে আসেনি। এখানে ৮শত মিটার রাস্তা কার্পেটিং করার কথা ছিল। সড়কসহ কালভার্টটির মেরামতের কাজ করা হলে খুব সহজে উপজেলা সদরে যাতায়াত করা যাবে।’
উওর বড়াকোঠা গ্রামের আ. রহমান সিদ্দিকি (৪৫) বলেন, ‘কালভার্টটির উত্তর পাশে অনেকের ফসলি জমি রয়েছে। উভয় পাড়ের লোকজনকে প্রতিটি মৌসুমে উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। সংযোগ সড়ক নির্মাণসহ কালভার্টটি মেরামত করলে এ ঝামেলা আর হতো না।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মেসার্স মৌ এন্টারপ্রাইজ প্রোপ্রাইটর তন্ময়ের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ঠিকাদারের পক্ষে কাজ তদারককারী মো: মিজানুর রহমান বলেন, প্রকল্প এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন ও বৃষ্টির সমস্যার কারণে কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে এবং কাজের গতি কমে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
বড়াকোঠা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, কালভার্ট ও রাস্তার নির্মাণ না হওয়ায় জনগণের খুবই সমস্যা হচ্ছে। ঠিকাদারকে প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে বার বার তাগিদ দেয়া হচ্ছে কিন্তু তারপরেও কাজ করছে না। এ প্রসঙ্গে উজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী সুব্রত রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
![](https://ajkercrimetimes.com/wp-content/uploads/2023/11/BestFarma-213x300.jpeg)