ঢাকাশুক্রবার , ১ আগস্ট ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লু*টে*র স্বর্ণ কিনে কোটিপতি জামান স্বর্ণকার

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ১, ২০২৫ ২:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্বর্ণের দোকানের আড়ালে সুদের ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই ও লুটের স্বর্ণ কেনার অভিযোগ উঠেছে জামান জুয়েলার্স মালিকের বিরুদ্ধে। চোরাই স্বর্ণ কেনার অভিযোগে জামান জুয়েলার্সের ম্যানেজার নাজমুল ইসলামকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।

গত বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় ওই জুয়েলার্সের ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করলেও বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, গোদনাইল ধনকুণ্ডা এলাকার আব্দুল মালেকের বাড়ি থেকে সাড়ে ১১ ভরি স্বর্ণ ও ২২ ভরি রুপা চুরি করে রাফিন ও হাসিবুর রহমান নামে ২ শিক্ষার্থী। তারা ধরা পড়ার পর বেরিয়ে আসে জামান জুয়েলার্সের গোপন রহস্য। জামান জুয়েলার্সের সুদ ব্যবসার মক্কেল সংগ্রহকারী ৩ নারীর সহায়তায় ওই ২ শিক্ষার্থী চুরি করা স্বর্ণের সিংহভাগই বিক্রি করে জামান জুয়েলার্সে। গ্রেপ্তারের পর ওই ২ শিক্ষার্থী থানা পুলিশের এসব তথ্য জানায়। তখন পুলিশ জামান জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে ম্যানেজার নাজমুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানায়, চোরাই স্বর্ণ কেনার কথা নাজমুল ইসলাম স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া চুরির ঘটনায় করা মামলায় নাজমুল ইসলাম ও তার সহযোগী ৩ নারীকেও আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আদমজী সোনামিয়া বাজার এলাকায় মো. আসাদুজ্জামান ‘জামান জুয়েলার্স’ নামে একাধিক স্বর্ণের দোকান গড়ে তুলেছে। তার বড় ছেলে ওমর ফারুক একটি, ছোট ছেলে হৃদয় একটি ও আরেকটি দোকান আসাদুজ্জামান নিজে পরিচালনা করেন। এলাকায় তিনি ‘জামান স্বর্ণকার’ হিসেবে পরিচিত। তিনি সোনামিয়া বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। সরেজমিন জামান জুয়েলার্সে গিয়ে দোকানে স্বর্ণের দেখা মেলেনি। একজন বসে আছেন, আর দুজন বসে ঘুমাচ্ছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির প্রভাব খাটিয়ে আসাদুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণের দোকানের আড়ালে অনৈতিক ব্যবসা করে আসছেন। বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে স্বর্ণ বন্ধক রেখে সুদে টাকা দেওয়া, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে লুটে আনা স্বর্ণালংকার কম দামে কিনে জামান স্বর্ণকার বনে গেছেন কোটিপতি। সুদে টাকা দিয়ে আসল স্বর্ণ বন্ধক রেখে ফেরত দেওয়ার সময় নকল স্বর্ণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনামিয়া বাজারের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, স্বর্ণ বন্ধক রেখে সুদে টাকা লাগানো আসাদুজ্জামানের মূল ব্যবসা। তার বড় ছেলে জনি স্বর্ণ ব্যবসার পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িত। তাকে ফেনসিডিলসহ একাধিকবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। চোরাই স্বর্ণ কেনার অপরাধে দোকানের ম্যানেজার গ্রেপ্তার হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন দোকান মালিক আসাদুজ্জামান ও তার ছেলে ওমর ফারুক।

এ বিষয়ে জানতে আসাদুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার ছেলে ওমর ফারুকের মোবাইলে ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এ কারণে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে অভিযুক্ত আসাদুজ্জামানের আরেক ছেলে হৃদয় চোরাই স্বর্ণ কেনায় দোকানের ম্যানেজারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে স্বর্ণ বন্ধক রেখে সুদের ব্যবসার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘একান্ত পরিচিত কিছু কাস্টমার স্বর্ণ রাখতে চাইলে তাদের কাছ থেকে রাখা হয়। সবার কাছ থেকে নয়।’

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, চোরাই স্বর্ণালংকার কেনায় জামান জুয়েলার্সের ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম ও গোদনাইল এলাকার মনসুর শেখ নামে একজন মেকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারাও চুরির মামলার আসামি। চুরির মামলায় ২ শিক্ষার্থীসহ ৪ জনকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।