ঢাকাশনিবার , ২ আগস্ট ২০২৫

আগৈলঝাড়ায় প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধ*র্ষ*নে*র ঘটনায় অভিযু*ক্ত ধ*র্ষ*ক গ্রে*প্তা*র

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ২, ২০২৫ ৪:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিয়ের প্রলোভন দিয়ে এক প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণ করে বখাটে পলাশ সরদার। এতে ওই প্রতিবন্ধী যুবতী গর্ভবতী হয়ে পরে।

এঘটনায় ওই প্রতিবন্ধী যুবতীর মা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ধর্ষক পলাশ সরদারকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষককে গতকাল শনিবার বরিশাল আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের চাঁদত্রিশিরা গ্রামের এক প্রতিবন্ধী যুবতী (৩৮)’র বাড়িতে পার্শ্ববতীর্ বাড়ির মৃত রহিম সরদারের ছেলে পলাশ সরদারের যাতায়াত ছিল। এই সুবাধে ওই পলাশ সরদার প্রতিবন্ধী যুবতীকে কু—প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। চলতি বছরের ১লা ফেব্রুয়ারী রাতে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রতিবন্ধী যুবতীকে বখাটে পলাশ সরদার তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এঘটনা কাউকে না জানাতে যুবতীকে হুমকি দেন ধর্ষক পলাশ সরদার।

প্রতিবন্ধী যুবতীর শারীরিক পরিবর্তনের কারনে তার পরিবারের সন্দেহ হয়। পরে ১৩ জুলাই ডাক্তারী পরীক্ষা—নিরীক্ষা করে জানা যায় ২২ সপ্তাহের গর্ভবতী ওই যুবতী। পরে প্রতিবন্ধী ওই যুবতীকে জিজ্ঞাসা করলে সে পলাশের কথা বলেন। এঘটনায় প্রতিবন্ধী যুবতীর মা বাদী হয়ে ১৩ জুলাই রাতে আগৈলঝাড়া থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলার পলাতক আসামী ধর্ষক পলাশ সরদারকে এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযান চালিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ৩১ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার (১আগস্ট) রাতে কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে আগৈলঝাড়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। গতকাল শনিবার সকালে ধর্ষক পলাশ সরদারকে বরিশাল আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, গত রমযানের আগে একদিন নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষন করে পাশের বাড়ির পলাশ সরদার। এ সময় ঘটনাটি কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয় দেখানো হয়। ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী নারীর মা জানান, ধর্ষনের আগে ও পরে ভয় দেখানো হয় তার মেয়েকে। যে কারনে কাউকে কিছু জানাননি তিনি।

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে অর্থের বিনিময়ে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন কিছু প্রভাবশালী। তবে ধামাচাপা নয় নায্য বিচার দাবী করেন তিনি। তবে ধামাচাপা নয়, বিষয়টি নিয়ে আপোস—মিমাংশার কথা বলেছিলেন বলে জানান এলাকার প্রভাবশালী ছালাম মোল্লা।

তবে মামলার আগে ধর্ষনের কথা অস্বীকার করে ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে জানালেও, গ্রেপ্তারের পর ধর্ষনের কথা স্বীকার ও ভুক্তভোগী ওই প্রতিবন্ধী নারীকে বিয়ে করতে চান অভিযুক্ত ওই যুবক পলাশ সরদার। আর অর্থের বিনিময়ে ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপার সম্পর্কে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। এলাকাবাসী জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী ওই নারীর প্রতি অন্যায় করা হয়েছে।

শারীরিকভাবে অক্ষম ভুক্তভোগী নারীর সাথে দুর্বলতার সুযোগে যে ব্যাক্তি এই ধরণের অমানবিক কাজ করেছে তার বিচার হওয়া উচিত। কিছু লোক ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য পায়তারা করছে। চাপ প্রয়োগ করে নিতে দেয়া হয়নি আইনি ব্যবস্থা ওই ভুক্তভোগী পরিবারকে।

তারা আরো জানান, প্রভাবশালীরা যদি ধর্ষককে বাঁচাতে প্রতিবন্ধী ওই নারীর গর্ভের ৬ মাসের ভ্রম্নণকে হত্যা করা হয় সেটিও হবে অপরাধ ও সামাজিক অবক্ষয়। তাই ধর্ষক ও ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকারীদের বিচারের দাবী জানিয়েছে তারা।

এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষনের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষককে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে গ্রেপ্তার করে আগৈলঝাড়া থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।