
নিউজ ডেস্ক :: বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী চাকুরীজীবী এক খ্রিস্টান তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রথমে ধর্মান্তরিত পরে প্রতারণামূলক মিথ্যা নোটারি তৈরির মাধ্যমে বিয়ে করে একাধিকবার ধর্ষণ ও গর্ভধারণের পর স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই সন্তানের জনককে কারাগারে প্রেরন করেছে আদালত ।
এঘটনায় মামলার বাদী ভুক্তভোগী ওই নারী গত ২১ জুলাই বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে প্রতারক ও ধর্ষক মোঃ ফরিদুল ইসলাম (৪০)’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নাম্বার ৪৭৩/২৫। ফরিদুল ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার কেওতা গ্রামের মোঃআলমগীর হায়দার ও ফরিদা বেগমের সন্তান। ফরিদ বরিশাল নগরের অস্থায়ী বাসিন্দা।
সে প্রথম স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে বরিশাল নগরে বসবাস করেন। ঐমামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মাজেদ ৩০ জুলাই সকালে বরিশাল নগরী থেকে আসামী প্রতারক মোঃ ফরিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করেন। আদালতের বিচারক আসামীর জামিন না মঞ্জুর করে ফরিদকে জেল হাজতে প্রেরন করেন। মামলার বাদী নগরের সিএন্ডবি রোডস্থ বগুড়া আলেকান্দা এলাকার বাসিন্দা।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ২০১৮ সালে ফরিদুল ইসলামের সাথে তার মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়।তখন তিনি নিজেকে অবিবাহিত বলে আমার কাছে পরিচয় দেন। পরে বেশ কয়েক বছর পরে তাদের দুজনার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামি আমাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিলে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর আমি খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করি। এর এক মাস পর ফরিদ ১১ অক্টোবর মিথ্যা নোটারির মাধ্যমে প্রতারণা করে ফরিদ আমাকে বিয়ে করে।
এরপরে ফরিদ আমাকে নগরের হাতেম আলী চৌমাথা এলাকার হোটেল প্রেসিডেন্টএ নিয়ে হোটেল কক্ষে এবং বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক (ধর্ষণ) করে। আমার শরীর অসুস্থতা অনুভব করলে গত ১২ জুন আমি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। চিকিৎসক আমাকে জানায় আমি গর্ভবতী। বিষয়টি ফরিদকে জানালে তিনি আমার সাথে যে শারীরিক সম্পর্ক করেছে তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে।
এরপর বিষয়টি আমি আমার নিকাটাত্মীয় ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের জানাই। তখন তারা আমাকে বলে নোটারি কোন বিবাহের স্বীকৃতি না। কাজীর মাধ্যমে নিকাহ রেজিস্ট্রি কাগজ কোথায়। আমি তাদেরকে বলি আমাদের বিবাহ কাজীর মাধ্যমে বিবাহ রেজিস্ট্রি হয়নি। নোটারির মাধ্যমে বিবাহ হয়েছে। আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের পরামর্শে আমি ফরিদকে কাজীর মাধ্যমে বিবাহের রেজিস্ট্রি কাগজ করে দিতে বলি।
তখন থেকে তিনি তালবাহানা ও আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। এরপর আমি বাধ্য হয়ে ফরিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২১ জুন আদালতে মামলা দায়ের করি। ওই মামলায় গত ৩০ জুলাই সকালে নগরের আদালত পড়ার সামনের সড়ক থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাজেদ আসামী ফরিদুলকে আটক করে আদালতে হাজির করে। আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার এস আই মোঃ মাজেদ আসামী ফরিদুলকে আটক ও জেল হাজতে প্রেরনের সত্যতা স্বীকার করেছেন।