
নিউজ ডেস্ক :: আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে নির্বাচন পেছানোর কোনো দাবি তোলা যাবে না। আমরা এটি মনে করি। সেই দাবি তুললে দেশে অস্বস্তি বাড়বে, আশঙ্কা বাড়বে। দেশের শত্রুরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। সেই জায়গায় আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রংপুর নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। এবি পার্টি মনে করে যেসব বিষয়ে সকল দল একমত রয়েছে, সেসব বিষয় এখনই বাস্তবায়ন করা দরকার। যদি সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন, দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার বিধান, সংসদে নারীদের আসন সম্পর্কে এখনই সবাই একমত হয় তবে সেটি কেন আমরা ২০৩১ সাল পর্যন্ত আটকে রাখব
নিবার্চন নিয়ে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের ওপর আমরা আস্থাশীল। উনি ডিসেম্বর ২০২৫ সাল থেকে জুন ২০২৬ সালের মধ্যে নির্বাচনের ওয়াদা করেছিলেন। তিনি ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এটিকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেভাবে অবনতি হচ্ছে, সেখানে নির্বাচনকালীন সময় বড় দলের বাহিরের প্রার্থীরা যারা নির্বাচন করবেন, তারা নিরাপদে, নিশ্চয়তার সাথে নির্বাচন ক্যাম্পেইন করতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এখনই প্রার্থীদের ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের হুমকি ও ভয় দেখানো হচ্ছে। নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাবে।
তিনি বলেন, সরকার প্রধান বলেছিলেন- এই নির্বাচন হবে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ নির্বাচন। কিন্তু শ্রেষ্ঠ নির্বাচনের জন্য সরকারের যে প্রস্তুতি ও যে পরিমাণ সিদ্ধান্তমূলক জায়গা দেখাবার কথা ছিল, সেটা দেখা যাচ্ছে না। সারাদেশে পুলিশের ওপর, আমলাতন্ত্রের ওপর, সশস্ত্র বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ওপর সরকারের কর্তৃত্বশীল ও নিয়ন্ত্রণ হওয়ার কথা ছিল, তা গত এক বছরে আমরা দেখি নাই। সিদ্ধান্তহীন বাস্তবতা রেখে একটা ভালো নির্বাচন আয়োজন করা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এখনো সময় রয়েছে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করার।\
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের ব্যাপারে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনায় বসেন নাই, এটি দুঃখজনক। এক বছর হতে চলেছে কমিশন যদি রাজনৈতিক দলের সাথে না বসে, সংস্কার, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কতদিনে করবে? কোথায় কোথায় রাজনৈতিক দল সহযোগিতা করবে, সেসব আলোচনা ছাড়া সংস্কার অথবা নির্বাচনের দিকে আগালে কারো জন্য মঙ্গলজনক হবে না। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের উচিত যে সংস্কারগুলো দ্রুত করা দরকার তা, রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সাথে পরামর্শ করে বাস্তবায়ন করা।
তিনি আরও বলেন, একটি রাষ্ট্র ৬০ বছরেও ভালো নির্বাচন করতে পারে না। এটি সকল রাজনৈতিক ও নাগরিকদের জন্য লজ্জার। ৬ দফার প্রথম দফা ছিল ভালো নির্বাচন। ২০২৫ সালে ঐকমত্য কমিশনে আমরা সবাই একটি ভালো নির্বাচনের জন্য কথা বলতেছি। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, ১৪০০ মানুষ জীবন দিয়েছে। তাই ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রের জন্য আমাদের সবাইকে মিলে ভালো নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
এ সময় কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাসেত মারজান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, রংপুর জেলা সদস্য সচিব মো. এনামুল হক, মহানগর আহ্বায়ক গোলজার হোসেন, সদস্য সচিব মাহবুবার রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।