ঢাকামঙ্গলবার , ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালে গত ৫ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার, মৃত্যু  ১৯

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫ ১১:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক  :: বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর স্রোত আগষ্টের শেষভগে কিছুটা স্তিমিত হলেও সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আবার সাবেক রূপলাভ করেছে। সদ্য সমাপ্ত আগষ্টে বরিশালের সরকারি হাসপাতালেই আরো দুই হাজার ৩১০ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে মারা গেছেন দুজন। এনিয়ে গত ৫ মাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতেই ১০ হাজার ৪৪১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হবার খবর দিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছন ১৯জন।

এখনো প্রতিদিন গড়ে সোয়াশ ডেঙ্গু রোগি সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে ইতোমধ্যে ১০,১২০জন ডেঙ্গু রোগী ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল থেকে ঘরে ফিরেছেন।

তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে সরকারি হাসপাতালের বাইরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাটা আরো কয়েকগুন বেশী। স্বাস্থ্য বিভাগ চলতিমাসে বরিশাল সন্নিহিত এলকায় ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে কিছুটা শংকিত আছে বলেও জানা গেছে।বরিশাল বিভাগের ভ্রমণ

বিভাগীয় পরিচালকের মতে সাধারণত আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসেই আমরা ডেঙ্গু নিয়ে বাড়তি সতর্কতায় থাকি। তবে আগেষ্টর শেষভাগে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও তা ছিল সাময়িক। গত বছরও সেপ্টেম্বরের শেষভাগ পর্যন্তই বরিশালে ডেঙ্গু রোগীর সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষনীয় ছিল।

চলতি বছরের এপ্রিলের শুরু থেকেই এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু বরিশাল অঞ্চল যুড়ে হানাদিতে শুরু করে। কিন্তু মে মাসের মধ্যভাগ থেকেই পরস্থিতির অবনতি শুরু হয়ে জুনের শেষভাগ পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ডেঙ্গুরোগী ভর্তির পাশাপাশি মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয় ১২ জনের নাম।বরিশাল বিভাগের ভ্রমণ

কিন্তু জুলাই মাসেও পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত থেকে মাসের প্রথম ১৫ দিনেই দুই সহশ্রাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গু নিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছিল। জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালগুলোতেই ভর্তীকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৮,১৩১ জনে উন্নীত হবার পরে একমাসের মাথায় তা সাড়ে ১০ হাজারে পৌঁছেছে।

সেপ্টেম্বরের প্রথমদিন দুপুর পর্যন্ত এ অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১১৯ রোগীকে ছাড়পত্র দেয়ার পরে অরো ৩শতাধিক ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। তারমধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৩ জন এবং জেলার অন্যান্য হাসপাতালোতে আরো ১৪ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এপর্যন্ত মৃত ১৯ জনের মধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালেই মারা গেছেন ১১ জন।

গত এক সপ্তাহে সরকারি হাসপাতালগুলোতে নতুনকরে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী এখনো এডিস মশা ও তার লর্ভা ধ্বংশের তৎপড়তার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। উপরন্তু বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার পরিস্থিতির ভিন্নতা লক্ষণীয়। এবারই শহরের তুলনায় গ্রামঞ্চলে ডেঙ্গু সংক্রমন অনেক বেশী। এ অঞ্চলের অনেক গ্রামের ৬৮ শতাংশ বাড়ীতেই এডিস মশার লার্ভার অস্তিত্ব পেয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের পর্যবেক্ষক দল।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বার বারই বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ এ অঞ্চলের সবগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডেঙ্গুর জীবানুবাহী এডিস মশা নিধনে তাগিদ দেয়া হচ্ছে।বরিশাল বিভাগের ভ্রমণ

এমনকি গত পাঁচ মাসের পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন করে পুরনো এলাকার পরিবর্তে নতুন কিছু এলাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পরার বার্তা দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

তবে আর্থিক সংকটের সাথে ফগার মেশিন এবং হ্যান্ড স্প্রেয়ারের অভাবের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এ অঞ্চলের পৌরসভাগুলোও মশক নিধনে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর পক্ষে এ ধরনের কার্যক্রম গ্রহনের বিষয়টিকে অবান্তর বলছেন তারা। ফলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে প্রকৃতিই এখনো ভরসা বলেই মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল।