ঢাকাশুক্রবার , ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পটুয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়কে দাঁড় করিয়ে ইউএনওকে অভ্যর্থনা, সমালোচনার ঝড়

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫ ১:৪৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীর বাউফলের ইউএনও আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নুরই আয়েশা সুচিকে বাউফল আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট প্রকাশ ও মতবিনিময় সভার নামে অনুষ্ঠান আয়োজন করে এই সংবর্ধনা দেয়া হয়৷

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগে কখনও রেজাল্ট ঘোষণার জন্য এভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন হয়নি। প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম ইউএনও ও তার স্ত্রীকে খুশি করতে মতবিনিময় সভার অন্তরালে সংবর্ধনার আয়োজন করে।

জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের আস্থাভাজন হওয়ায় সহজেই দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তার স্বামী মাহফুজুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। অন্যদিকে, ইউএনও আমিনুল ইসলাম ৩৫ বিসিএস এর কর্মকর্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাথে জড়িত ছিলেন। পতিত হাসিনা সরকারে মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেনের ভাগ্নী জামাই তিনি।

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্ত্রী ও পুত্র সন্তানসহ ইউএনও আমিনুল ইসলাম দুপুর ৩টায় বিদ্যালয়ে যান। ইউএনওর আগমন উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১টা থেকে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা আছে, কোনো ভিআইপির আগমন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না।

প্রথমে ইউএনও এবং তার স্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর ইউএনওকে ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা গান ও নৃত্য পরিবেশনও করে।

এ বিষয়ে জানতে ইউএনও আমিনুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সংযোগ কেটে দেন। অতি উৎসাহিত হয়ে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ইউএনওকে স্বাগত জানিয়েছেন স্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম। তিনি বলেন, ইউএনও স্যার আসছেন ভাবিকে নিয়ে তাই একটু আপ্যায়ন করেছি। আপনারা আসলেও করবো। অল্প সময় নাচ গান হয়েছে। কয়েকজন ছাত্রীকে শাড়ি পড়তে বলা হয়েছে। ইউএনও স্যারের সন্মানে করেছি, এখন আপনারা যদি বলেন ভুল হইছে। তাইলে ভুল করছি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ইউএনও’র বদলী হলে তিনি একটা বিদায় সংবর্ধনা দিছে হয়তো, এমনটা বুঝতাম। এখন কেনো এমন করলেন বুঝতে পারছি না। তবে শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করানোর সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) রায়হান কাওছার বলেন, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসককে বিদ্যালয়ের বিষয়টি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। বাউফলের ইউএনও’র বিষয় অফিসে আরও কথা হচ্ছে। ইউএনওকে সতর্ক করা হবে বলেও জানান তিনি।