
এনায়েত হোসেন মোল্লা :: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতীয়বাদী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তরুণ নেতা সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেছেন, “তারুণ্যের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক।” তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।
বরিশাল ২ : উজিরপুর-বানারীপাড়া আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সাইফ মাহমুদ জুয়েল। তরুণ এই প্রার্থী এলাকার উন্নয়ন ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
জুয়েল বলেছেন, “আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে এই অঞ্চলকে একটি আধুনিক জেলায় রূপান্তরিত করব। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সড়ক ও অবকাঠামোর উন্নয়নসহ সর্বক্ষেত্রে যুগোপযোগী পরিবর্তন এনে উজিরপুর-বানারীপাড়াকে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত এলাকায় পরিণত করাই আমার লক্ষ্য।”
সাইফ মাহমুদ জুয়েল আরও বলেন, “আমার নির্বাচনে জয়ী হলে এলাকার যুব সমাজকে মাদকের অন্ধকার জগত থেকে দূরে রেখে তাদের খেলাধুলা ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে কাজ করব। তরুণ প্রজন্মই দেশের ভবিষ্যৎ, তাদের সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়াই হবে আমার প্রধান অঙ্গীকার।”
সাইফ মাহমুদ জুয়েল তার বক্তব্যে আরও বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা জাতীয় রূপকল্পের কথা তুলে ধরে বলেন, এ কর্মসূচির লক্ষ্য একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও কল্যাণমূলক বাংলাদেশ গঠন করা। তিনি বলেন, এই রূপকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশ নতুন এক দিগন্তে প্রবেশ করবে।
তিনি যে মূল দফাগুলো তুলে ধরেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সাংবিধানিক সংস্কার:
- সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন, সকল অগণতান্ত্রিক সংশোধনী বাতিল ও গণভোট ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন।
- দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা।
- প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সীমাবদ্ধতা আরোপ।
- বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে সংসদের পাশাপাশি একটি উচ্চকক্ষ গঠন।
স্বাধীন বিচার বিভাগ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার:
- স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন।
- বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করা, জুডিশিয়াল কমিশন ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃপ্রবর্তন।
- দুদক সংস্কার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান।
স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও মানবাধিকার:
- সকল রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা।
- গুম-খুন-নির্যাতনের অবসান ও মানবাধিকার কমিশন শক্তিশালীকরণ।
- সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, সাগর-রুনি হত্যার বিচার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।
অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান:
- অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন ও বৈষম্য দূরীকরণ।
- ন্যায্য মজুরি, শিশু শ্রম বন্ধ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও বেকার ভাতা চালু।
- কৃষির উন্নয়ন, ন্যায্য দাম, কৃষি বীমা ও প্রক্রিয়াজাত শিল্পে প্রণোদনা।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়ন:
- শিক্ষা বাজেটে জিডিপির ৫% বরাদ্দ, গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতে অগ্রাধিকার।
- ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির উদ্যোগ।
- সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য কার্ড চালু ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার।
নারী, যুব ও সংখ্যালঘু অধিকার:
- নারীর সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন, সংসদ ও স্থানীয় সরকারে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি।
- আধুনিক যুব নীতিমালা, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান।
- সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণ ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা।
অবকাঠামো, প্রযুক্তি ও পরিবেশ:
- সড়ক, রেল ও নৌপথের আধুনিকায়ন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ।
- নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়ন ও জ্বালানি খাত থেকে দুর্নীতি দূরীকরণ।
- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় টেকসই কৌশল ও নদী-খাল খনন।
- তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা ও আণবিক শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি।
তিনি বলেন, “এই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক, সমৃদ্ধ ও আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করা সম্ভব। আর সেই পথের প্রথম পদক্ষেপ হলো তারুণ্যের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে দেয়া।”


