
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে পরিবেশ সুরক্ষা অবৈধ ইটভাটায় অভিযান গুঁড়িয়ে বন্ধ।
বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীতে পরিবেশ সুরক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কঠোর অবস্থান দিন দিন আরও দৃঢ় হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সহকারী পরিচালক লোভানা জামিলের সরাসরি তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় বাউফল উপজেলায় পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দুইটি অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) কাছিপাড়া, গোপালদী ও ধাওড়াভাঙ্গা এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে একটি ইটভাটার ড্রাম-চিমনি গুঁড়িয়ে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অন্য ভাটাটিকে জরিমানা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন বাউফল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সোহাগ মিলু। মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউশনের দায়িত্বে ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. মোস্তাফিজুর রহমান। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও আনসারের একটি যৌথ টিম অভিযানে অংশ নেয়।
অভিযানে সহকারী পরিচালক লোভানা জামিল উপস্থিত থেকে সার্বিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন।
কাছিপাড়ার গোপালদী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ আইন অমান্য করে পরিচালিত আজিজ ব্রিকস কে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) অনুযায়ী অভিযুক্ত করে মোবাইল কোর্ট। তাৎক্ষণিকভাবে ভাটার ড্রাম চিমনি ভেঙে ফেলা হয় এবং ভাটার সব কার্যক্রম একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অভিযানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ধাওড়াভাঙ্গা এলাকার এএইচবি ব্রিকস কে আইন লঙ্ঘনের দায়ে মোবাইল কোর্ট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে অবৈধভাবে পুনরায় চালু ঠেকাতে ভাটায় থাকা বড় একটি অংশের কাঁচা ইট ভেঙে তেলে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালকের উদ্যোগে গত ২৩ নভেম্বর দুমকি উপজেলার ফেমাস ব্রিকস ভাটায় অভিযান চালিয়ে তা ধ্বংস করা হয়।
এরপর ৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী সদর উপজেলায় অহনা ব্রিকস ভাটায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অবৈধ চিমনি ভাঙা ও কার্যক্রম বন্ধসহ বড় আকারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ নিয়ে গত তিন সপ্তাহে পটুয়াখালী জেলায় মোট চারটি অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো বলে জানান কর্মকর্তারা।
অভিযান শেষে পরিবেশ অধিদপ্তর, পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক লোভানা জামিল বলেন, পরিবেশ ধ্বংস, বায়ুদূষণ এবং কৃষিজমির ক্ষতি করে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করা একটি গুরুতর অপরাধ। এমন কার্যক্রম কাউকে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। এটি আমাদের কঠোর অভিযানের শুরু মাত্র। পটুয়াখালীতে অবৈধ ভাটা একটিও থাকতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী কারোর প্রভাব নয়, আইনই এখানে একমাত্র সিদ্ধান্ত। জনগণের স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তর সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত মনিটরিং চলছে। দ্রুতই আরও অন্তত কয়েকটি ভাটার বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অধিদপ্তর বলেছে, পটুয়াখালীকে পরিবেশ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় সব কঠোর পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।


