ঢাকামঙ্গলবার , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বোমা তৈরি করে লন্ডনে ছবি পাঠালেই পুরস্কার পেতেন বোমা মাওলানা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ৬:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: বোমা তৈরি করে লন্ডনে ছবি পাঠালেই পুরস্কার পেতেন বোমা মাওলানা

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মুকিত হোসাইন ওরফে বোমা মাওলানাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার বোমা মাওলানা গান পাউডার সংগ্রহ করে প্রায় ৪০০ বোমা তৈরি করে। পরে এসব বোমা সে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাপ্লাই করেছিলেন। তার সাপ্লাই করা বোমার মধ্যে একটি বোমা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জা‌নি‌য়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, আমরা অনেক দিন ধরে মুকিত হোসাইন ওরফে বোমা মাওলান খুঁজছিলাম। তার নাম হলো মুকিত তবে সবাই তাকে ডাকে বোমা মাওলানা নামে। এক সময় সে আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও সভাপতি ছিল।

পরে তি‌নি ছাত্রদল মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তার ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। এরপর থেকে তার নাম হয় বোমা মাওলানা। দলীয় আনুগত্য ও উগ্র/সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করেন স্বয়ং তারেক জিয়া।

তিনি বলেন, মহানগর জজ কোর্ট প্রাঙ্গনে যে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়েছে ছিলো সেটার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বোমা মাওলানা। ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পাঠানো ১০ কেজি পরিমাণ গান পাউডার বোমা মাওলানা রিসিভ করে ভাটারা থানার যুবদলের আহবায়ক রবিউল ইসলাম নয়নের কাছ থেকে। এ এই গান পাউডার দিয়ে কয়েক দফায় প্রায় চারশত হাত বোমা তৈরি করেন তি‌নি। পরে এসব বোমা সাপ্লাই দিয়েছেন বিভিন্ন থানা যুবদলের আহবায়ক ও সদস্য সচিবদের। তার সরবরাহ করা হাত বোমা থেকে ১টি হাত বোমা যুবদলের সদস্য সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা মহানগর জজ কোর্ট আদালতের প্রাঙ্গনে বিস্ফোরিত করে ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী হাফসা আক্তার।

জিজ্ঞাসাবাদে তি‌নি জানান, প্রতিটি যানবাহনে আগুন দেয়ার জন্য আগুন দাতাদেরকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়।এছাড়া বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে। এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রায় ৬-৭ হাজার লোকের মিছিল নেতৃত্ব দিয়েছেন বোমা মাওলানা।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, নাশকতার জন্য যারা বোমা বানায় এবং বাস ও ট্রেনে যারা নাশকতা করে তাদের অনেকের নাম পেয়েছি। এই বোমা মাওলানা ২৭ অক্টোবর একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আর সেখানে বসে তিনি পরিকল্পনা করছিলেন কোথায় থেকে বোমা বানানোর সরঞ্জাম সংগ্রহ করা যায় আর কাকে দিয়ে এসব বোমা বিস্ফোরিত করে কাকে পঙ্গু করা যায়।

তিনি বলেন, লন্ডন থেকে আসা নির্দেশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক/ভীতি ছড়ানোর কাজে ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিনে ৮টি টিম গঠন করা হয়। তার দায়িত্ব ছিলো কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সাথে সমন্বয় করা। সমন্বয় করে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো। এছাড়া সে ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের যুবদলের কর্মীদেরকে দিয়ে যানবাহনে আগুন দেয়ার কমপক্ষে ৬টি ঘটনার সমন্বয় করেছে সে। আমরা তার কাছ থেকে আমরা অনেক তথ্য পেয়েছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার বোমা মৌলানা যুবদলের কর্মীদেরকে শিখিয়ে দিতেন কিভাবে আগুন লাগাতে হবে। আর তাদের বলতেন যে, তার বলা কায়দায় যদি আগুন লাগানো হয় সেই ছবি যদি লন্ডনে পাঠানো হয় তাহলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।

যুবদল সভাপতি টুকুকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।