ঢাকাশুক্রবার , ২৭ অক্টোবর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও দেশের মানুষ নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত, চরমোনাই পীর

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
অক্টোবর ২৭, ২০২৩ ৩:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক  :: স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও দেশের মানুষ নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত, চরমোনাই পীর।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, দেশ এখন চরম সঙ্কটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও দেশের মানুষ নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা এখনও অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের আন্দোলনে বাধা প্রদান করলে রাজপথ আরও প্রকম্পিত হবে। জনতার উত্তাল তরঙ্গ শুরু হবে। সভাসমাবেশে বাধা দিলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে। অতএব বাধা না দিয়ে দ্রুত ক্ষমতা ছাড়ুন।

 

আজ শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে রাসুল সা.-এর সিরাত’ শীর্ষক জাতীয় সিরাত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।

চরমোনাই পীর বলেন, জাতীয় সম্পদের অপরিকল্পিত অপব্যবহারের মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া করে দিয়েছে। যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। একই সমস্যাকে কেন্দ্র করে দিনদিন দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে দেশ অস্থিতিশীলতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। নিম্নবিত্ত তো বটেই মধ্যবিত্তের নাগরিকরাও জীবনধারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি সুন্নাহকে উপেক্ষা করে মানবরচিত বুর্জোয়া নীতি আদর্শের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজ করার কারণেই দেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের এসব সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। সুন্নাহর আলোকে জাতীয় সম্পদের অপব্যবহার রোধের মাধ্যমে এসকল জাতীয় সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব।

nagad
তিনি বলেন, নববী আদর্শ বাদ দিয়ে মানবরচিত কুফরি মতবাদের অনুসরণ ও অনুকরণর কারণে দেশের সামগ্রিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলামী অনুশাসন বাদ দিয়ে অন্য কোনো বুর্জোয়া মতবাদের প্রাধান্য দেয়া কখনোই বুদ্ধিমান শাসকদের কাজ হতে পারে না।

বিএনপির সমাবেশ নিয়ে চরমোনাই পীরের হুঙ্কার
দুই দলকেই সরে যেতে বলেছে পুলিশ
তিনি আরও বলেন, এখানকার রাজনীতির ধরণ দেখলে মনে হয় দেশ প্রাকসভ্য পর্যায়ে রয়েছে। বিগত জাতীয় নির্বাচনসমূহ ভোট ডাকাতির মহোৎসব করে গণতন্ত্র ও স্বাধীনভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও দেশের রাজনীতি অস্থির হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গলাটিপে হত্যা করেছে। প্রশাসনকে নির্জীব আজ্ঞাবহ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বাঁচো-মরো পরিস্থিতিতে ফেলেছে। যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই অবস্থার পরিবর্তনে ক্ষমতাসীনদেরকেই প্রদান ভূমিকা নিতে হবে। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও শান্তি পূর্ণ করতে হবে। সে জন্য জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।
বর্তমান সরকার দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গলাটিপে হত্যা করেছে। প্রশাসনকে নির্জীব আজ্ঞাবহ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বাঁচো-মরো পরিস্থিতিতে ফেলেছে। যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই অবস্থার পরিবর্তনে ক্ষমতাসীনদেরকেই প্রদান ভূমিকা নিতে হবে। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও শান্তি পূর্ণ করতে হবে। সে জন্য জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, নয়া দিগন্তের সিনিয়র সহসম্পাদক মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুফতি ইমামুদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুফতি রশীদ আহমাদ, মাওলানা মুহাম্মাদ যাইনুল আবেদীন, আল্লামা ওবায়দুল কাদের নদভী, ড. হুসাইনুল বান্না, অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম অপু, আহমদ বদরুদ্দীন খান, মুফতি শামছুদ্দোহা আশরাফী।

সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলামিস্ট ও সিরাত গবেষক করেন কবি মুসা আল হাফিজ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন আলতাফ হোসেন, ডা. শহীদুল ইসলাম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, ফজলুল হক মৃধা, নজরুল ইসলাম খোকন, এমএম শোয়াইব, জিয়াউল আশরাফ, নাযীর আহমাদ শিবলী, মুফতি আবদুল আহাদ প্রমুখ।

চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম আরও বলেন, সরকার বিরোধী দল দমনে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। প্রশাসন ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। হামলা, মামলা দিয়ে নিরীহ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ও ৩ নভেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সরকার ভয়ে এসব সমাবেশে ঘিরে নানা অপকৌশল গ্রহণ করেছে। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে ওঠেছে। ৩ নভেম্বরের পূর্বে সরকার সসম্মানে পদত্যাগ না করলে ৩ নভেম্বরের পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতির সকল দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।

তিনি বলেন, ৩ নভেম্বর ঢাকায় জনতার মহাস্রোত নামবে। জনতার স্রোতে সরকার ভেসে যাবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, সর্বত্র অশান্তির আগুন জ্বলছে। মানুষ গড়ে থাকলে খুন হয়, আর রাস্তায় বের হলে হয় গুম। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা যাচ্ছে না। সরকার বাকশাল কায়েম করতে চায়। এ জন্যেই স্বচ্ছ ভোট দিতে চায় না। তামাশার ভোট আয়োজন করলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। জাতীয় সরকারের অধীন ছাড়া কোনো নির্বাচন সহ্য করা হবে না।

চরমোনাই পীর বলেন, দেশ আজ নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে জলকামান, টিয়ারসেল, বুলেট মেরে জনতার যৌক্তিক আন্দোলন দাবিয়ে রাখতে চায়। সরকার দেশের জনগণের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে।