নিউজ ডেস্ক :: নোয়াখালীতে পুকুরে ধরা পড়লো ১০ কেজি ইলিশ
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার একটি পুকুরে অন্যান্য মাছের সঙ্গে মিলেছে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ। পুকুরের পানিতে পাওয়া প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় ৫০০-৬০০ গ্রাম করে।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের যুগান্তর কিল্লা গুচ্ছগ্রামের পুকুরে জাল দিলে মাছগুলো ধরা পড়ে।জানা যায়, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের যুগান্তর কিল্লা গুচ্ছগ্রামের পুকুরটি স্থানীয় ৪০ পরিবার ব্যবহার করে। পুকুরটি লিজ নিয়েছেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান। বিশাল পুকুরে প্রায় সাত দিন ধরে সেচ দিয়ে পানি কমান তিনি। বুধবার সকালে পানি প্রায় কমে এলে জেলেদের জাল দিয়ে মাছ ওপরে তোলেন। এ সময় অন্যান্য মাছের সঙ্গে প্রায় ১০ কেজি ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। বিগত বছরগুলোতেও এই পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে।স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘২০২২ সালে প্রথম ধাপে ৩৫টি ইলিশ পাওয়া গেছে। পরে আবারও পাওয়া গেছে। এই বছর প্রথম ধাপে ১০ কেজি ইলিশ পাওয়া গেলো। এটা সত্যিই আনন্দের। মাছগুলো দেখতে ভোরবেলায় মানুষের ভিড় জমে। আরও মাছ পাওয়া যাবে।’
পুকুরের মালিক আবদুল মান্নান বলেন, ‘প্রায় ৪০ পরিবার যুগান্তর কিল্লা গুচ্ছগ্রামের পুকুরটি ব্যবহার করে। সাত দিন ধরে পুকুরটি সেচের জন্য মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেচের পুরো কাজ শেষ হবে। বুধবার পুরো পুকুরে জেলেদের দিয়ে জাল ফেলানো হয়েছে। জালে অন্যান্য মাছের সঙ্গে ১০ কেজি ইলিশ ধরা পড়েছে। মাছগুলো ৫০০-৬০০ গ্রামের মধ্যে। জোয়ার এলে পুকুরটিতে পানি ঢুকে যায়। আমি পানি ধরে রাখি, তাই ইলিশ মাছগুলো জীবিত থাকে। এ বছর ১০০-১২০ কেজি ইলিশ পাবো বলে ধারণা করছিনিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন সময় জোয়ারে নিঝুম দ্বীপের প্রায় সব পুকুর তলিয়ে যায়। এর মধ্যে যুগান্তর কিল্লা পুকুরটিও আছে। সেখানে আবদুল মান্নান ২০২২ সালেও ৬-৭ কেজি ইলিশ মাছ পেয়েছেন। এবার পেলেন ১০ কেজি ইলিশ। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় ইলিশ পুকুরে এসেছে। পানি বের হতে না পারায় মাছগুলো নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘পুকুরে ইলিশ হয় বিষয়টি এমন নয়। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় ইলিশ পুকুরে এসেছে। নিঝুম দ্বীপ নিম্নাঞ্চল, তাই জোয়ারে প্লাবিত হয়। পুকুরটি যখন প্লাবিত হয়েছে, তখন ইলিশ প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া আলাদা কিছু এখানে নেই।’
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। ইলিশ মাছ একটি বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের মাছ। জোয়ারের পানি পুকুরে প্রবেশ করলে তখন নোনা পানির সঙ্গে ইলিশও প্রবেশ করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাদু পানিতে ইলিশ মাছ কম বাড়লেও একটা সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এটি লাভজনক নয়। এ ছাড়া স্বাদু পানিতে ইলিশের স্বাদ ও গন্ধ ঠিক থাকে না।