
নিউজ ডেস্ক :: ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় নির্মমভাবে খুন হওয়া ব্যবসায়ী লালচাঁদ ওরফে সোহাগের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার নিজ জেলা বরগুনার ইসলামপুর গ্রামে। বাবার কবর জড়িয়ে ১০ বছরের ছেলে সোহান বারবার বলছিল, ‘আমার বাবাকে ওরা মেরে ফেলল, আমরা এখন কোথায় যাব?’
সোহাগের মেয়ে সোহানা (১৪) চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেছে, ‘আমার বাবার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ওরা শুধু আমার বাবাকে মেরে ফেলেনি, পুরো পরিবারটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।’
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সোহাগ শুধু একজন ব্যবসায়ী ছিলেন না, তিনি ছিলেন গ্রামের মানুষের ভরসার স্থল। ঢাকায় ব্যবসা পরিচালনা করলেও, ঈদ-পার্বণ কিংবা বিপদে-আপদে ছুটে আসতেন গ্রামের মানুষের পাশে। গরিবদের জন্য খোলা ছিল তার দরজা, মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়নে দান করতেন মন খুলে। সর্বশেষ তিনি একটি মসজিদের জন্য এক লাখ টাকা দান করেন।
গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, ‘সোহাগ ছিল আমাদের গর্ব। এমন মানুষকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মেরে ফেলবে, এটা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না।’
স্থানীয়দের দাবি, মিটফোর্ড এলাকায় চাঁদা না দেয়াতেই সোহাগকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই হত্যাকাণ্ড শুধু একজন সজ্জন মানুষের প্রাণহানি নয়, এটি আমাদের নিরাপত্তা, মানবতা ও বিচারব্যবস্থার প্রতিও এক নির্মম প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে।
এর আগে, গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে শতাধিক মানুষের সামনে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, হামলাকারীরা রড ও বড় পাথর দিয়ে সোহাগের মাথা ও বুকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং হত্যার পর উল্লাস করে তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নিন্দা ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।