
নিউজ ডেস্ক ::ঝালকাঠির রাজাপুরে একই সময় ও একই স্থানে উপজেলা বিএনপি ও যুবদল পৃথক সমাবেশের আয়োজনের ঘোষণা দেওয়ায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন।
আজ বুধবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির একাংশ জুলাই গণ–অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উপলক্ষে উপজেলা মার্কেট চত্বরে র্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করেছে। একই সময়ে উপজেলা চত্বরে ‘জুলাই/২৪ বিপ্লব’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে উপজেলা যুবদল। দুটি পক্ষই এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় চিঠি দিয়েছে। তবে কোনো পক্ষকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
উপজেলা বিএনপির চিঠিতে বলা হয়েছে সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র আবদুস সালাম। প্রধান বক্তা থাকবেন দলের নির্বাহী কমিটির সহ তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এইচ এম সাইফ আলী খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ হোসেন ও সদস্যসচিব শাহাদৎ হোসেন।
অন্যদিকে উপজেলা যুবদলের সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন ঝালকাঠি জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম। প্রধান বক্তা থাকবেন জেলা যুবদলের সদস্যসচিব আনিসুর রহমান ও সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাছুম বিল্লাহ পারভেজ।
একই সময় ও স্থানে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাক দেওয়ায় গতকাল দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। দুই পক্ষের নেতা–কর্মীরা নানা মন্তব্য ও পোস্টে একে অপরকে আক্রমণ করেন। এ ছাড়া দুই পক্ষের আয়োজনকে ঘিরে গতকাল বিকেলে মিছিল, মোটরসাইকেল মহড়া হয়। উপজেলা মার্কেট চত্ত্বরে উভয় পক্ষের লোকজন এবং পুলিশ অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নূর হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রথমে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছি। পরে শুনলাম একই স্থানে যুবদলও অনুমতি পেয়েছে; কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, জাকির হোসেন মোল্লা যিনি যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হয়ে চিঠিতে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি একই সঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও আছেন—এটা কীভাবে সম্ভব?’
এ বিষয়ে যুবদল নেতা জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, উপজেলা যুবদল আগেই এ কর্মসূচির প্রস্তুতি নেয়। বিএনপির কর্মসূচি বিষয়ে যুবদল কিছুই জানে না।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালুকদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাকে কেউ বিষয়টি জানায়নি। উভয় পক্ষ আলোচনা করে কর্মসূচি করলে ভালো হতো।’
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঠেকাতে পুলিশ যথেষ্ট তৎপর রয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও রাহুল চন্দ বলেন, ‘কর্মসূচির বিষয়ে কেউ আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়নি। শুধু অবহিত করেছে। একই সময় ও একই স্থানে উভয় পক্ষ কর্মসূচি ঘোষণা করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটতে পারে। তাই সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আইন অমান্য করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’