ঢাকারবিবার , ৩০ জুন ২০২৪

দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুন ৩০, ২০২৪ ১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে, যাতে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার যাত্রী যাতয়াত করছে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মেট্রোরেল একটা নিরাপদ যান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এই মেট্রোরেল চালু হবার পরে ঢাকার যানজট অনেকাংশে কমে গেছে।

তিনি বলেন, রাজধানীর যানজট সহনশীল করার জন্য আমরা ঢাকা মাস ট্রানজিট তৈরি করেছি, এর মাধ্যমে ৬টা রুটে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে, একটা তো হয়েই গেছে।

ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সার্ভে করছি। আমি থাকতে থাকতে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে আমি মেট্রোরেল করে দিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ, যাতে দেশের মানুষ দ্রুততম সময় যানজট মুক্ত হয়ে চলাচল করতে পারে।

আজ শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ-বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বাজেটকে উচ্চাভিলাসী বলে মন্তব্য করেছেন। আমি মোটেই তা মনে করি না। বাজেট শতভাগ কখনো পূরণ হয় না। তারপরও সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে।

সেই লক্ষ্যে আমরা যেতে পেরেছি। কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট! আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই না সম্ভব হয়েছে। আমাদের ইচ্ছাটা কি? দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। সেজন্যই তো উন্নয়নটা হয়।আমাদের উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যেই আমরা এই বাজেট প্রণয়ন করেছি এবং উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। এখানে কমানোর কিছু নেই।

তিনি বলেন, এই বাজেটের মধ্যে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল সেটি বাস্তবায়নে সক্ষম হবো। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের আছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল করি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আমাদের কিন্ত নিজেদের ঘোষণাপত্র আছে, আমরা কিন্তু নির্বাচনের আগে ইশতেহার ঘোষণা করি। এই ইশতেহার আমরা কখনো ভুলে যাই না। জাতির কাছে যে ওয়াদা দিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি তা পালন করি। এই বাজেট প্রণয়নকালীন সময়েও আমাদের যে নির্বাচনী ইশতেহার, সেটির অগ্রাধিকার এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের যে দিক-নির্দেশনা সেটাও বাজেটে উঠে এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস সর্ববৃহৎ বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থ-বছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৭৫ শতাংশ। বাজেটের উপর এ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখে বাজেটের উপর আলোকপাত করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকেই বাজেট নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাজেট নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যে যাই করুক সকলকেই আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কেউ কেউ বাজেটকে উচ্চাভিলাসী বলেছেন, কেউ বলেছে ঘাটতি বাজেট। কিছুক্ষণ আগে বিরোধীদলীয় নেতা বললেন- এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার কমাতে হবে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি কমাতে হবে ইত্যাদি। এবং এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মতো সক্ষমতা আছে কিনা। চ্যালেঞ্জ নেওয়াটাই তো আমাদের কাজ। চ্যালেঞ্জ নিয়েই তো আমরা চলতে চাই, চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদেরের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন হাত পাতার জায়গায় নেই। আমরা ঋণ নেই, ঋণ শোধ করি। এরশাদ সাহেবের সময় রংপুরে মঙ্গা লেগেই থাকতো। এখন মঙ্গা নেই। আজকের সাফল্যে কৃতজ্ঞতা দেশের জনগণের প্রতি। তারা বার বার আমাদের সমর্থন দিয়েছে। তাই আমরা কাজ করতে পেরেছি। কোভিড অতিমারীর সময় অনেক উন্নত দেশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারেনি। আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ধণাত্মক। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অজনকারী দেশগুলোর তালিকায় সামনের সারিতে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে। আমরা উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করি এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করি। যারা পরিবর্তনগুলো দেখেন না, তাদের বলবো গ্রামে যান। গ্রামের মানুষের যে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে, সেটা গেলেই দেখবেন। এরশাদ সাহেবের উত্তরবঙ্গে যে মঙ্গা নেই, সেটাও দেখবেন। কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন এলকায় দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকতো। সেখানে ছুটে গেছি, মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। গ্রামের পর গ্রামে গিয়েছি, মানুষের শরীরে মাংস ছিল না চামড়া আর হাড় ছাড়া। এখন মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পেরেছি।