ঢাকাশুক্রবার , ৫ জুলাই ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পটুয়াখালীতে ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সড়ক সংস্কারের কাজে অনিয়মের অভিযোগ 

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ৫, ২০২৪ ৯:২০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: পটুয়াখালীতে ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সড়ক সংস্কারের কাজে অনিয়মের অভিযোগ

পটুয়াখালীর মহিপুরের বিপিনপুর-নিজামপুর সড়ক সংস্কারের কাজে উঠেছে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ। কোথাও হাতের টানে, কোথাও পায়ের আঙ্গুলের টানে উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ। কোথাও আবার পায়ের চাপে দেবে যাচ্ছে। সড়কটিতে ২৫ মিলিমিটার পুরো পিচ ঢালাই দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক স্থানেই দেওয়া হয়েছে ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার। পটুয়াখালীর মহিপুরে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মাত্র ১০ দিন পরই এমন দুরবস্থা হয়েছে সাগর সিনেমা হল থেকে নিজামপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত ৩.৩ কিলোমিটার সড়কের। কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি অফিসের উদাসীনতা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে সড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে। এতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে এলাকাবাসী।

শুক্রবার (৫ জুলাই) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি সংস্কারের পরে হস্তান্তরের আগেই ফাটল, উঠে গেছে বিটুমিন কোথাও কোথাও মাটির সাথে মিশে গেছে ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সড়ক সংস্কারের কাজ। অনিয়মের চিত্র বেড়িয়ে আশায় রাস্তা পরিদর্শন করে ফের সংস্কারের আশ্বাস দেন উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু এবার নামে নয় টেকসই মেরামতের দাবি এলাকাবাসীর।

কলাপাড়া এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পের আওতায় এ সড়কের পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে এলজিইডি। ৩.৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির প্রস্থ ৩ মিটার। ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ের এ সড়কের নির্মাণ কাজ পায় শহীদুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১০ দিন আগে শেষ হয়েছে এ সড়কের পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টাকা। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় হস্তান্তরের আগেই বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে সড়কটি।

নিজামপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মন্নান হাওলাদার জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখানে মনগড়া কাজ করে গিয়েছে আমরা যখন কাজে বাধা দিয়েছি তখন বলেছে বেশি কথা বললে চাঁদাবাজি মামলা দিব। দুই লাখ টাকা অফিসারদের দিলে আর কোন সমস্যা হবে না এভাবেই কাজ করে যাব। কাজ শেষ হওয়ার এক মাস পরেই সব জায়গা থেকে ভিটুমিন উঠে গেছে। আমাদের দাবি আবার পুনরায় সঠিকভাবে রাস্তা সংস্কার করা হোক নাহয় আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।

আক্ষেপ নিয়ে স্থানীয় ইসমাইল খান নামের এক বৃদ্ধ জানান, আমরা দীর্ঘদিন কাঁচা রাস্তা হেটেছি এরপরে ইটের রাস্তা ছিল এখন সংস্কার করতে এসে আমি মাত্র কাজ করে গেল। কাজ শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই কমপক্ষের ২০ জায়গা থেকে রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এই রাস্তা দরকার নাই, ভালো করে রাস্তা কাজ করে দেবে এটাই আমাদের দাবি।

কাজটির দায়িত্ব পাওয়া মেসার্স শহিদুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি স্বত্বাধিকারী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনো এলজিইডিকে কাজটা বুঝিয়ে দেইনি। তবে সাব কন্টাকটারের কিছুটা গাফিলতি এবং বৃষ্টি হয়েছে তাই কিছু স্থান থেকে রাস্তাটি নষ্ট হয়েছে। যে জায়গাগুলো থেকে নষ্ট হয়েছে সেগুলো আমরা এখন আবার পুনরায় সংস্কার করে দিব।

অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম জানান, কার্পেটিং উঠা ও ভেঙে যাওয়ার সত্যতা পেয়েছি এখানে এসে। দ্রুত পুনরায় এই রাস্তা সংস্কারে নির্দেশ দিয়েছি, এরপরে আমরা এ রাস্তা আবার পরিদর্শন করবো সঠিক মত কাজ না হলে তাদেরকে বিল দেয়া হবে না।